ইকমো সাপোর্টে থেকে করোনাকে হার মানালেন কলকাতার তরুণী, চিকিৎসাজগতের বিরলতম ঘটনা

অবিশ্বাস্য বিরল ঘটনার সাক্ষী থাকল কলকাতা মহানগরী। ইকমো সাপোর্টে থেকেও ১২ দিন পর করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠলেন দক্ষিণ কলকাতার এক তরুণী। তাঁকে প্রাণ ফিরিয়ে দিলেন ঢাকুরিয়া আমরি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। ভারতে এমন ঘটনা এই প্রথম।

গত ১৭ মে জ্বর, শ্বাসকষ্ট এবং গলা ব্যথার মতো লক্ষণ দেখা দেওয়ায় ওই তরুণীকে ভর্তি করা হয়েছিল আমরিতে। টেস্টের পরই পজিটিভ আসে কোভিড-১৯ এর রিপোর্ট। দেখা যায় তাঁর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৩৪ শতাংশ কমে গেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে পরিবর্তন করে রাখা হয় ভেন্টিলেটরে। কিন্তু তাতেও অক্সিজেনের মাত্রা ৮২ শতাংশের বেশি উঠছিল না। ফলে বাধ্য হয়েই চিকিৎসকরা ইকমো সাপোর্ট ব্যবহার করেন।

একস্ট্রা-কর্পোরিয়াল মেমব্রেন অক্সিজেনেশন বা ইকমো একটি জটিল পদ্ধতি। প্রথম দেহ থেকে রক্ত বার করে, কৃত্রিমভাবে সেখানে অক্সিজেন প্রদান করা হয়। বার করে নেওয়া হয় কার্বন-ডাই-অক্সাইড। তারপর সেই রক্ত আবার প্রবেশ করানো হয় রোগীর শরীরে। টানা ৩০০ ঘণ্টা লড়াইয়ের পর স্থিতিশীল হয় ওই তরুণীর পরিস্থিতি। ২৯শে মে তাঁকে ইকমো থেকে পুনরায় ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। ৫ জুন পুরোপুরি সুস্থতায় ফেরেন ওই তরুণী।

করোনা ভাইরাসের মূল লক্ষ্য ফুসফুস। সংক্রমণ খুব বেশি ছড়ালে শ্বাসতন্ত্র কাজ করা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ফুসফুসে পৌঁছাতে পারে না। তখন এই পদ্ধতিই আবশ্যিক হয়ে পড়ে রোগীকে বাঁচাতে। এর আগে দিল্লি এবং চেন্নাইতে ইকমো ব্যবহৃত হয়েছিল কোভিড রোগীর ওপরে। তবে বাঁচানো সম্ভব হয়নি দুই ক্ষেত্রেই। তাই কলকাতার এই তরুণীকে প্রাণ ফিরিয়ে দিতে পেরে উচ্ছ্বসিত চিকিৎসকরা। এই ঘটনা চিকিৎসাজগতের এক অন্যতম সাফল্য হিসাবেই মনে করছেন তাঁরা।

Powered by Froala Editor