১০০ সেকেন্ড ধরে কৃত্রিম সূর্য জ্বালিয়ে রেকর্ড চিনের

বিজ্ঞানের অগ্রগতি হাতের মুঠোয় এনেছে প্রকৃতিকে। এমনকি আকাশের চাঁদ-সূর্যকেও পৃথিবীর মাটিতে নামিয়ে আনতে চেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আর সেই চাহিদা থেকেই বেশ কিছু দেশে শুরু হয়েছে কৃত্রিম সূর্য তৈরির প্রকল্প। সম্প্রতি সেই কর্মসূচিতেই নতুন মাইলস্টোন তৈরি করল চিন। চিনের পারমানবিক সমন্বয়ক বিক্রিয়কে একটানা ১০০ সেকেন্ড ধরে ১৬০ মিলিয়ন ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতা বজায় রাখতে সক্ষম হলেন বিজ্ঞানীরা। উষ্ণতা এবং স্থায়িত্ব, দুদিক থেকেই এ এক রেকর্ড।

বিগত বেশ কিছু বছর ধরেই চিন সহ নানা দেশে শুরু হয়েছে কৃত্রিম সূর্য তৈরির প্রচেষ্টা। গতবছর এই উদ্দেশ্যেই তৈরি হয় এক্সপিরিমেন্টাল অ্যাডভান্সড সুপারকন্ডাক্টিং টোকামাক বা ইস্ট। সূর্যের বুকে প্রতি মুহূর্তে পারমাণবিক সমন্বয় ঘটার ফলেই তার তাপশক্তির সৃষ্টি হয়। আর এই শক্তি সারা সৌরজগতের শক্তির উৎস। গত ডিসেম্বরেই প্রথমবারের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে এই যন্ত্র চালু করা হয়। সেই সময় ১০০ মিলিয়ন ডিগ্রি উষ্ণতায় ২০ সেকেন্ড ধরে সেই সূর্য জ্বলেছিল। সেবারেই উষ্ণতা ছিল সূর্যের প্রকৃত উষ্ণতার থেকে ১০ গুণ বেশি। আর এবারের উষ্ণতা আরও বেশি।

২০০৬ সালে প্রথম পারমাণবিক শক্তিকে উচ্চস্তরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা শুরু করে চিন। এর মধ্যেই ফ্রান্সের বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে হাত মেলায় সিনজিন ইউনিভার্সিটি। শুরু হয় ইস্টের কাজ। সূর্যের সঙ্গে তুলনা করা হলেও এর থেকে উৎপন্ন তাপশক্তি আসলে নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। ফলে পারিপার্শ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কোনো সম্ভাবনা থাকে না। কিন্তু এই বিপুল তাপশক্তিকে ঠিকভাবে ব্যবহার করা গেলে আগামীদিনে বিদ্যুতের ঘাটতি থাকে না। এখন শুধু প্রযুক্তিটি আর একটু উন্নত করা বাকি। যে উষ্ণতা পাওয়া গিয়েছে তা পর্যাপ্ত, কিন্তু আরও বেশি সময় ধরে তা স্থায়ী রাখতে হবে। আর কয়েক মাসের মধ্যেই তা সফল হয়ে যাবে বলেও আশা করছেন সিনজিন ইউনিভার্সিটির গবেষক লি-মিয়াও। সৌরজগতের শক্তি উৎস তখন সূর্যের চেয়েও আরও অনেক বেশি হয়ে উঠবে। প্রকৃতিকে হারিয়ে দেবে মানুষের উদ্ভাবনী বুদ্ধি।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
কেন্দ্রের চেয়েও অধিক উষ্ণতা বায়ুমণ্ডলে! সূর্যরহস্য সমাধান বিজ্ঞানীদের