‘মানুষ’ হয়ে উঠছে রোবটও! বিশেষ অ্যালগোরিদম তৈরি বিজ্ঞানীদের

কিছুদিন আগেও রোবট বললেই মনে হত কঙ্কালের মতো সরু লিকলিকে কোনো ধাতব মূর্তির কথা। এখন রোবটদের চেহারা অনেকটা মানুষের মতো হয়েছে। তবে তার শরীর একইরকম শক্ত। ধাতু বা প্লাস্টিক দিয়েই তৈরি। তার শরীরে এখনও মানুষের মতো কোমলতা আসেনি। তবে এই বিষয়টা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই ভাবছিলেন প্রযুক্তিবিদরা। আসলে শুধু মানুষের মতো দেখতে করে তোলাই নয়, তার কাজের পরিধিও যেন মানুষের মতো সূক্ষ্ম থেকে বিরাট পর্যন্ত নানা মাত্রা ছুঁতে পারে, সেই চেষ্টাই করছেন তাঁরা। অবশেষে ম্যাসাচুসেট ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির দুই গবেষকদের চেষ্টায় সেই কাজে সাফল্য আসতে চলেছে।

একটি নির্দিষ্ট রোবটের কাজের পরিসর খুবই কম। হয় তা বড়ো ধরনের কাজ করতে পারে, নাহলে অতি সূক্ষ্ম কোনো তথ্য সংগ্রহের কাজ। এই দুই ধরণের কাজ একসঙ্গে করার জন্যই প্রয়োজন কোমল ও স্থিতিস্থাপক রোবট। তবে তার নির্মাণ খুব কঠিন না হলেও তাকে পরিচালনার মতো অ্যালগরিদম বিজ্ঞানীদের হাতে ছিল না। বস্তুত এত জটিল অ্যালগরিদম তৈরি করতে পারছিলেন না কেউই। অবশেষে সেই কাজে সফল হলেন অ্যালেকজান্ডার এমিনি এবং অ্যান্ড্রু স্পিলবার্গ। ডিপ লার্নিং মেথডের সাহায্যেই সেই অ্যালগরিদম তৈরি করেছেন তাঁরা।

সফট রোবটিক্সের উপর আয়োজিত আসন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনেই তাঁদের গবেষণাপত্র উপস্থাপন করবেন এমিনি ও অ্যান্ড্রু। ‘রোবটিক্স অ্যান্ড অটোমশন লেটার্স’ পত্রিকায় সেই গবেষণাপত্র ছাপাও হবে তারপর। ইতিমধ্যে এমআইটি-র অধ্যাপকরা তাঁদের কাজের প্রশংসা করেছেন বলেই জানাচ্ছেন দুই গবেষক। আর এই আবিষ্কার নিঃসন্দেহে রোবটিক্সের জগতে এক বিপ্লব এনে দেবে। এতে সাধারণ রোবটের মতো বাইরের দিকে যেমন সেন্সর থাকবে, তেমনই সেন্সর থাকবে তার শরীরের মধ্যেও। ফলে নিজের শরীরের সমস্ত তথ্যও রোবট নিজেই বুঝতে পারবে। ঠিক যেভাবে পজিটিভ এবং নেগেটিভ ফিডব্যাক কন্ট্রোলের সাহায্যে মানুষের শরীর চালিত হয়, তাই হবে রোবটের ক্ষেত্রেও। তবে আপাতত পুরোটাই গাণিতিক মডেল। তাকে কাজে লাগাতে এখনও বেশ কয়েক বছর সময় লেগে যাবে।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
স্টিফেন হকিং-এর কণ্ঠস্বর ও দুই ‘বিস্মৃত’ ভারতীয় প্রোগ্রামারের গল্প