কাঁটা দিয়েই কাঁটা তুলল বায়ার্ন, এক গোলের ব্যবধানে স্বপ্নভঙ্গ পিএসজির

পিএসজিকে হারিয়ে ষষ্ঠবারের ইউরোপ সেরার মুকুট মাথায় তুলল বায়ার্ন মিউনিখ। দুই জার্মান স্ট্র্যাটেজি-মেকারের মধ্যে শেষ হাসি হাসলেন হান্স ফ্লিক। ৫৯ মিনিটের গোলেই নির্ধারিত হয়ে গেল ম্যাচের ফলাফল।

প্রথম থেকেই টুথ এন্ড নেল একটা লড়াই জারি রেখেছিল দুই ফাইনালিস্ট। ক্রমাগত আক্রমণ-প্রতি আক্রমণের ঝাঁঝালো গন্ধে ভরে ছিল মাঠ। ১৯ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত প্যারিস-সাঁ-জা। পরপর তিনটে সুযোগ মিস করেছেন নেইমার, এমব্যাপে এবং ডি-মারিয়া— পিএসজির এই তিন তারকাই। প্রতিবারেই ঝাঁপিয়ে পড়েছেন নয়্যার। অনবদ্য রিফ্লেক্স ঠেকিয়ে রেখেছিল ম্যাচের ভাগ্য। প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক কেলর নাভাসের দুটি সেভ-ও ছিল দেখার মতো।

প্রথমার্ধে দুই দলই আক্রমণ শানালেও বায়ার্ন মিউনিখ মাঝমাঠেই আটকা পড়ে যাচ্ছিল বারবার। সিলভা-বার্নাট-কেহরারদের প্রাচীর প্রতিরোধ করছিল জার্মান আক্রমণ। তবে দ্বিতীয়ার্ধে শুরু থেকেই অনেকটা নিষ্প্রভ হয়ে গেল পিএসজি। কোথাও যেন প্রথমার্ধের গোল খিদেটাই ছিল না নেইমার-ডিমারিয়াদের খেলায়। কয়েকটা লং-রান ছাড়া সারা মাঠ দাঁড়িয়েই কাটাতে হল তরুণ প্রতিভা এমব্যাপেকে। কোথাও গিয়ে মাঝ-মাঠের দুর্বলতা, ফাঁক ধরা পড়ছিল পিএসজির। সাপ্লাই-লাইনে বড়োসড়ো ঘাটতি দেখা যাচ্ছিল।

একের পর এক জার্মান আক্রমণ যখন আছড়ে পড়ছে পিএসজির দুর্গে, তখন মার্কিংয়ের ভুল ডেকে আনল বিপদ। পরিবর্ত কিমিচের বাড়ানো ক্রস থেকেই হেডে গোল করলেন কোয়েম্যান। যেন কাঁটা দিয়েই কাঁটা তোলা। পিএসজি থেকেই উঠে আসা উইঙ্গার পেরেক পুঁতে দিলেন পিএসজির কফিনে, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের আশায়। ৫৯ মিনিটে গোল হজম করার পর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ এসেছিল বেশ কয়েকটা। কিন্তু কাজে লাগাতে পারলেন না নেইমাররা। 

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল ঘিরেই এবার আবর্তিত হচ্ছিল অনেকগুলো ইতিহাস তৈরির সুযোগ। ফাইনালে একগোলের ব্যবধানে জিতে বার্সেলোনার ৪৫ গোলের রেকর্ড অধরা থেকে গেল বায়ার্নের। এখনও এক সিজনে সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসাবে রেকর্ড ধরে রাখলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। তবে ত্রিমুকুট জয়ের সঙ্গে সঙ্গেই ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের সাফল্যকে ছাপিয়ে গেল জার্মান জায়েন্ট। ২০০৭-৮ সালে ম্যান-ইউ অপরাজিতভাবে জিতলেও ড্র হয়েছিল দুটি ম্যাচ। এবার একটিও ম্যাচ না হেরে চ্যাম্পিয়ন হল বায়ার্ন। 

তবে এটাই কি প্রত্যাশিত ফাইনাল ছিল? সেকেন্ড হাফে বড়ো ম্যাচের সেই টান-টান উত্তেজনায় কোথাও যেন খামতি থেকে গেল। ‘ওয়ে টু লিসবন’-এ অনেক আশা দেখিয়েছিল পিএসজি। কিন্তু এবারেও অধরা থেকে গেল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। এই নিয়ে টানা দীর্ঘ ২৭ বছর ফ্রান্সে পৌঁছাল না ইউরোপ সেরার তকমা...

আরও পড়ুন
বায়ার্নকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ার পথে পিএসজি; কার হাতে উঠবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ট্রফি?

Powered by Froala Editor