বিসর্জন নয় ‘পরিযায়ী দুর্গা’র, সংরক্ষণের পথে বরিশা ক্লাবের প্রতিমা

দশমীর তিথি পেরিয়ে গেছে। এক এক করে, নিরঞ্জনের পথে হেঁটেছে শহরের সমস্ত প্রতিমাই। তবে ব্যতিক্রম বেহালার বরিশা ক্লাব। পরিযায়ী মায়ের বেশে এখানে উমা এসেছিলেন বাপের বাড়ি। মর্ত্যলোক থেকে আর ফিরছেন না তিনি। বরং থেকে যাচ্ছেন শহর কলকাতাতেই। বরিশা ক্লাবের এই অসাধারণ মাতৃমূর্তির সংরক্ষণ করা হবে বলেই সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিলেন এমনটাই। তাতে রাজি হয়েছে ক্লাব কর্তৃপক্ষও।

করোনা পরিস্থিতিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশার ছবি ফুটে উঠেছিল দেশজুড়ে। শিশুদের কোলে নিয়েই মাইলের পর মাইল পথ হেঁটে তাঁরা ফিরেছেন বাড়ি। কারোর হয়তো রাস্তাতেই থেমে গেছে পথচলা। সেই করুণ ছবিই দেবীর মধ্যে ফুটিয়ে তুলেছিলেন শিল্পী পল্লব ভৌমিক। রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছিল এই অসাধারণ শিল্পসৃষ্টি। মূর্তির সংরক্ষণ হবে জানতে পেরে খুশি তিনিও, “এটা নিঃসন্দেহে ভালো খবর যে এমন একটা মূর্তির সংরক্ষণ হতে চলেছে।” খুশি কলকাতাবাসীও। করোনার আবহে অনেকেই সামনে থেকে প্রত্যক্ষ করতে পারেননি এই শিল্পকলা। সংরক্ষিত হলে পরবর্তীকালে এই মূর্তি সামনে থেকে দেখার সুযোগ মিলবে তাঁদেরও।

জানা গেছে আপাতত রবীন্দ্র সংগ্রহশালায় রাখা হবে ফাইবারের তৈরি এই মাতৃমূর্তি। পরে তা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে ইকোপার্ক কিংবা রবীন্দ্র সরোবরে। তবে তা এখনও অবধি নিশ্চিত করে কিছু জানানো হয়নি। তবে বছর ধরে এই মূর্তির প্রদর্শন ধরে রাখবে সেই দুর্দশার খণ্ডচিত্রকেই। মনে করিয়ে দেবে ইতিহাসকে। লকডাউনে যে অসম লড়াইয়ের সামনে অসহায় হয়ে পড়েছিলেন হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক, তারই লিখিত দলিল হয়ে থাকবে এই মূর্তি...  

Powered by Froala Editor