আবার কৃষ্ণাঙ্গ হত্যা আমেরিকায়, পুলিশের গুলিতে নিহত রাশইয়ার্ড ব্রুকস

একদিকে যখন জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার প্রতিবাদের আগুন ছড়িয়ে পড়ছে আমেরিকার সীমানা ছাড়িয়ে সমস্ত বিশ্বে, তখনই স্তম্ভিত জনতা সাক্ষী থাকল আরও একটি কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার। ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার সন্ধ্যায়। একটি প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলাকালীন একটি রেস্টুরেন্টের সামনে নিজের গাড়ির মধ্যে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন রাশইয়ার্ড ব্রুকস। আর তার মধ্যেই এক পুলিশ অফিসারের গুলিতে সেই ঘুম চিরস্থায়ী নিদ্রায় পরিণত হল। শুক্রবার এই ঘটনা আবার নতুন করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে আমেরিকার মধ্যে। এমনকি শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের তরফ থেকেও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

২৭ বছরের ব্রুকস হত্যার দায়ে রবিবার সকালে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার গ্যারেট রলফ ও আরও এক কর্মচারীকে বহিষ্কার করেছে আটলান্টা পুলিশ। যদিও জর্জিয়া অঞ্চলের ব্যস্ত রাস্তায় একটি গাড়ি দীর্ঘক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখার বিষয়ে সশস্ত্র পুলিশের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন ছিল কিনা, সেবিষয়ে দ্বিধান্বিত প্রশাসনের এক অংশ। তবে এই বক্তব্য দিয়ে একটি হত্যাকে লঘু করে দেখা উচিত নয় বলেই শেষ পর্যন্ত মন্তব্য করেছে কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে যেখানে শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতির মীমাংসা সম্ভব ছিল সেখানে এই হত্যার পিছনে বৈষম্যবাদী মানসিকতারই প্রভাব দেখতে পাচ্ছেন মানুষ।

শুক্রবার আহত ব্রুকসকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাও করে পুলিশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অস্ত্রোপচারের সময়েই তাঁর মৃত্যু হয়। ব্রুকসের মৃত্যুতে তাঁর পরিবার তো বটেই, শোকস্তব্ধ আমেরিকা তথা বিশ্বের বর্ণ-বৈষম্যবিরোধী মানুষ। শনিবার সকালেই তাই ওয়েন্ডি রেস্টুরেন্টের সামনে অবস্থান বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়। শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত সশস্ত্র পুলিশের প্রবেশের ফলে পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। একদিকে আমেরিকার বহু মানুষের দীর্ঘদিনের সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা বর্ণবৈষম্য, আর অন্যদিকে মানবতাবাদী উদার আধুনিকতার সংঘর্ষে পরিস্থিতি তাই ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে, একথা বলাই বাহুল্য। এখন কীভাবে এই দ্বন্দ্বের নিরসন ঘটবে, এবং প্রকৃত স্বাধিকার অর্জন করবে আমেরিকার কৃষ্ণাঙ্গ মানুষরা, সেই দিকেই তাকিয়ে আছেন সারা পৃথিবীর শান্তিকামী মানুষ।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
ভালোবাসার কাছে সবই তুচ্ছ, বর্ণবৈষম্য সরিয়ে ঘর বেঁধেছেন এই বাঙালিরাও