উন্নয়নের নামে প্রাচীন স্থাপত্য ধ্বংস ওড়িশায়, প্রতিবাদে সরব এএসআই

নিজের শহরকে সুন্দর করে তুলতে তো প্রত্যেকেই চান। কিন্তু সৌন্দর্য বা আধুনিকতার অন্য নামই কি ইতিহাস ধ্বংস করে ফেলা? সচেতন মানুষ মাত্রেই বলবেন, অবশ্যই না। বরং ইতিহাসের উপাদানের মধ্যেই বেঁচে থাকে ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। আর তাই সম্প্রতি ওড়িশা সরকারের কর্মসূচিকে ঘিরে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতের প্রত্নগবেষণা সংস্থা এএসআই-এর সঙ্গে ওড়িশা সরকারের ঠান্ডা লড়াই-এর শুরুও এভাবেই।

ঘটনাটি ঘটেছে ভুবনেশ্বর শহরে একামরা ক্ষেত্র প্রত্নক্ষেত্রে। লিঙ্গরাজ মন্দিরকে ঘিরে থাকা এই প্রত্নক্ষেত্রে আজও গবেষণার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ঐতিহাসিকরা। মধ্যযুগের অনেক না জানা ঘটনাই উঠে আসছে মাটির নিচ থেকে। ভুবনেশ্বর পৌর সংস্থা এবং ওড়িশা ব্রিজ কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশনের কর্মসূচি যেন সেই ইতিহাস চর্চাতেই ইতি টানল। সেইসঙ্গে মন্দিরের আশেপাশের অনেক ঐতিহাসিক সৌধই ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে উন্নয়নের নামে। তার মধ্যে রয়েছে সম্প্রতি আবিষ্কার হওয়া শুক-সারী মন্দিরও।

ভুবনেশ্বর পৌর সংস্থার পক্ষ থেকে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, শহরের ঐতিহ্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যই এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। তবে যে-কোনো ঐতিহাসিক স্থাপত্যের কাছে কোনো নির্মাণ কর্মসূচি নিতে গেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভের দাবি, তেমন কোনো আইনি আলোচনার পথেই হাঁটেনি ওড়িশা সরকার। এমনকি এএসআই-এর পক্ষ থেকে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হলেও সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে এর বিরুদ্ধে আইনি রাস্তাতেও যেতে প্রস্তুত এএসআই। একের পর এক ধ্বংসপ্রাপ্ত ঐতিহাসিক সৌধের দিকে তাকিয়ে গবেষকরা শুধু ভাবছেন, এভাবেই হয়তো আধুনিকতার রথ পিষে ফেলবে সমস্ত ঐতিহ্যকে।

Powered by Froala Editor

More From Author See More

Latest News See More