আজ থেকে ৫০ বছর আগে বিজ্ঞানীদের চিন্তায় এসেছিল একটি সমস্যা। প্রথমবারের জন্য গবেষকরা ভেবেছিলেন প্রোটিনের ত্রিমাত্রিক গঠনের তাত্ত্বিক চিত্র গঠনের কথা। খুব সহজ মনে হলেও তেমনটা নয় আদৌ। রাসায়নিক সংকেত জানা থাকলেও উপযুক্ত ত্রি-মাত্রিক গঠনের জন্যই প্রোটিনের বিষয়ে এতদিন আটকে ছিল গবেষণার অনেক দিকই। সম্প্রতি সেই সমস্যারই সমাধান বার করল গুগল ডিপমাইন্ডের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ‘আলফা-ফোল্ড’।
বিজ্ঞানীরা যে সমাধান বার করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে। তবে শুনলে আশ্চর্য লাগার কথা, মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই প্রোটিনের উপযুক্ত অ্যাজিমোটাল গঠন তৈরি করে দিল গুগলের এ.আই.। ডিপমাইন্ডের সর্বশেষ সংস্করণে প্রোগ্রামাররা সংযোজন করেছিলেন আত্ম-শিক্ষণ পদ্ধতি। যা প্রোটিনের মধ্যে অবস্থিত প্রতিটি পরমাণুর ব্যাসের সঠিক অনুমান করতে সক্ষম। পাশাপাশি সক্ষম তার বন্ধন গঠনের সীমাবদ্ধতাগুলি বুঝতেও।
এই প্রযুক্তির মাধ্যমেই একের পর এক তাত্ত্বিক গঠন তৈরি করে গেছে গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। যৌক্তিকতার সঙ্গে না মিললে, বাতিল হয়েছে একেকটি মডেল। তবে প্রত্যাশিত ও সঠিক গঠন অনুমানের জন্য খুব বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয়নি বিজ্ঞানীদের। যে কোনো প্রোটিনের থ্রি-ডি স্পেশিয়াল গ্রাফ থেকে আর্কিটেকচার— সবকিছুই তৈরি করে দিয়েছে গুগল ডিপমাইন্ড। উল্লেখ্য, মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জন মল্ট জানান, এই প্রথম এ.আই.-এর ব্যবহারে গুরুতর কোনো বৈজ্ঞানিক সমস্যার সমাধান করা হল।
১৯৯৪ সাল থেকেই কাজ শুরু হয়েছিল প্রোটিন স্ট্রাকচার প্রেডিকশনের। পরবর্তীকালে বিশ্বব্যাপী এই গবেষণার অংশ হয়ে যায় গুগল-ও। মোট ১৪টি ট্রায়াল এ.আই বানানোর পরে শেষ অবধি সাফল্য পেল আন্তর্জাতিক অন্তর্জাল সংস্থাটি। তবে শুধুই কি জীববিজ্ঞান? অন্য যে কোনো বিষয়েই আগামীদিনে বিজ্ঞানীদের প্রভূত সাহায্য করবে গুগলের এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, এ ব্যাপারে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা। পাশাপাশি প্রোটিনের পুঙ্খানুপুঙ্খ গঠন সামনে আসায়, বিভিন্ন জটিল রোগেরও সমাধান অনেক সহজ হয়ে যাবে চিকিৎসকদের কাছে...
আরও পড়ুন
ভাইরাস ছড়াতে পারে কৃত্রিম আলোও, জানাচ্ছে বাঙালি বিজ্ঞানীর গবেষণা
Powered by Froala Editor