বাংলার ঘট—তত্ত্ব ও আখ্যান

আজকের দিনে যেটিকে সাধারণভাবে ঘট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, সেই বস্তুটি যে প্রাগৈতিহাসিক আধার, তা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। কিন্তু চাকার সাহায্যে মাটিকে কুণ্ডলীকৃত করে এই আধারটি ব্যবহার করার আগে খাদ্য, পান কিম্বা খাদ্যবস্তু সংগ্রহের আধার হিসেবে যে মৃত মানুষের খুলিই ব্যবহৃত হত,তা ঐতিহাসিক ভাবে সত্য। এখন এই মাটির কুণ্ডলীকৃত আধার বা ঘট আসার পরেও লোকজ সংস্কৃতি এবং পরবর্তীতে ধর্মাচারের মূলস্রোতে যে ঘট বস্তুটি প্রাধান্যলাভ করল, তা আসলে কিসের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হতে শুরু করল, তা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা হয়েছে। 

নৃতত্ত্বের ব্যাখ্যায়, মুণ্ডপূজার সংস্কৃতি অত্যন্ত আদিম এক সংস্কৃতি। মুণ্ডপূজা মূলত পূর্বপুরুষ পুজো। এই মুণ্ডপূজা বা মৃত মানুষের খুলিকে সংরক্ষণ করে তা পুজোর সংস্কৃতি একটা সময় বদলে যায়। মানুষ মূলত এই মাটির ঘট প্রতীকটির উপরেই চোখ, মুখ এঁকে তার উপাসনা শুরু করে। পুরুলিয়ার কোঁড়া উপজাতির বাঘুত পুজো কিম্বা সুন্দরবনে দক্ষিণরায়ের বারামুণ্ড পুজো সবকিছুতেই ওল্টানো ঘটের বিশেষ ব্যবহার। ভেবিয়ার দক্ষিণরায় মন্দিরে এখনও বেশকিছু ওল্টানো ঘট থাকলেও বছর দশ-বারো আগে ওখানে এক অদ্ভুত ওল্টানো ঘট ছিল, যার চোখ-নাক-মুখ বিদ্যমান ছিল। সাধারণত পৌষের শেষদিন কিম্বা মাঘের পয়লায় মৎস্যজীবী এবং মধু সংরক্ষকেরা বনাঞ্চলে ঢোকার আগে দক্ষিণরায় এবং নারায়ণীর এই বিশেষ বারামুণ্ড বা ঘটসদৃশ মুণ্ডের পুজো করে থাকে। আবার কার্তিক মাস জুড়ে মেদিনীপুরে কার্তিক মাস ব্যাপী 'লক্ষ্মীঘট' ও 'গণেশঘট' নাম্নী মুণ্ডমূর্তি বা ঘটের উপরের মুণ্ডমূর্তি পূজার চল আছে; এই ধরনের ঘটগুলোও বারামূর্তির মতোই ওল্টানো।

গণেশঘটের বিশেষত্ব হল, এই ঘটের উপর মাটির শুঁড় বিদ্যমান। ঠিক যেমন প্রায় সারা রাঢ়জুড়ে কিম্বা ওপারবাংলার রীতিতে গোটা শ্রাবণমাসাধিক কালে মনসা ঘটের পুজোর ব্যাপকতম রীতি। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া জেলার মনসাঘটগুলিতে একটি নাগচিহ্ন, অষ্টনাগ ইত্যাদি ঘটটিকে বেষ্টন করে রাখে। আবার বরিশালের শিল্পীদের তৈরি ঘটের মধ্যভাগে একটি স্ফীত অংশ তৈরি করা হয়; সেই স্ফীত অংশের উপরেই আঁকা হয় মনসার পট। সেই ঘট ভরেই মূলত সারা শ্রাবণমাস মনসাপূজার রীতি। বহু জায়গাতে দেখা যায় শ্রাবণের সংক্রান্তিতে অসংখ্য দুধপূর্ণ ঘটের প্রতিটির উপর একটি করে সিঁদূর দেওয়া সিজডাল দিয়ে পূজা উপাচার তৈরি করা হয়, এগুলো কিন্তু সবই গৌণঘট।

ঘটতত্ত্বের গভীরতম ব্যাখ্যাটির কথা আমরা আগেই বলেছি—খাদ্য ও পানের কাজে কিম্বা খাদ্যবস্তু সংরক্ষণের কাজে মৃত মানুষের খুলির বিকল্প হিসেবে চাকার সাহায্যে তৈরি কুণ্ডলীকৃত পাত্র বা ঘট আসার পর, সেই ঘটই লোকাচারের উপাদান হিসেবেও ব্যবহৃত হতে শুরু করে। আবার অন্য একটি দৃষ্টিকোণ থেকে বহু বহু ব্যাখ্যায় ঘটকে চিহ্নিত করা হচ্ছে গর্ভবতী নারীগর্ভের প্রতীক হিসেবে। সাধারণত বাংলার লক্ষ্মীপূজায় দেখা যায় ঘটের উপরে পান, সুপারি ও কলা দেওয়ার রীতি। পান কে যোনির প্রতীক, কলাকে লিঙ্গের প্রতীক, আমশাখা বা আম্রপল্লবকে নাড়ির প্রতীক, ঘটজলকে দেহরস বা রক্তের প্রতীক এবং ঘটের স্ফীত অংশকে গর্ভের চিহ্ন হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয় লোকজ চর্চায়। অনেকের ব্যাখ্যা—প্রকৃতপক্ষে সবটাই যোনি এবং লিঙ্গের মিলনে উদ্ভূত ভ্রুণের গর্ভসঞ্চারের প্রতীক। বাংলার ঘটে দেখা যায় ঘটের উপর সিঁদূর দিয়ে আঁকা লজ্জাগৌরীর চিহ্ন, যা বাংলার পুতুল বা পুত্তলিকা নামেও পরিচিত। এই পুত্তলিকা বা লজ্জাগৌরীও আসলে সন্তান প্রসবের প্রতীক। উপরের দুটি উর্দ্ধধাবিত হাত যন্ত্রণা কাতরতার কারণে উপরের দিকে ধাবিত। তন্ত্রোক্ত ক্রিয়াকর্ম কিম্বা তান্ত্রিক পূজাগুলিতে ঘটের উপর লজ্জাগৌরী চিহ্নের পরিবর্তে আঁকা হয় অধোমুখ ত্রিকোণ। অধোমুখ ত্রিকোণ আসলে যোনিচিহ্ন। প্রাচীনতম এইসব চিহ্নের মাধ্যমে আসলে উপাসনা করা হয় প্রজনন এবং সৃজনের। কৃষি সভ্যতার সঙ্গে যার সম্পর্ক গভীর এবং ওতপ্রোত।

আরও পড়ুন
‘নবান্ন’-এর দেশে দুর্ভিক্ষ : আশা-নিরাশার সাহিত্যপাঠ

সাধারণত তন্ত্রোক্ত দেবীপূজায় ঘট বসানো হয় বিশেষ এক যন্ত্র মণ্ডলের উপর, সাধারণ পূজার ক্ষেত্রে ঘট বসানো হয় অষ্টদলপদ্মের উপর। ভূমির উপর অষ্টদলপদ্ম আঁকা হয় পঞ্চগুঁড়ি দিয়ে। পঞ্চগুঁড়ি অনেকটা আবিরের মতো। পঞ্চগুঁড়ি প্রকৃতির পাঁচ উপাদান বা পঞ্চভূতের প্রতীক; পঞ্চভূত হল—ক্ষিতি (পৃথিবী), অপ (জল), তেজ (অগ্নি), মরুৎ (মরুবালু), ব্যোম (আকাশ)। এর উপরেই মৃত্তিকামণ্ডলটি রাখা হয়। তার উপর পঞ্চশস্য দেওয়া হয়। পঞ্চশস্য আসলে পঞ্চপ্রবৃত্তি (কাম, ক্রোধ, লোভ, ঈর্ষা, মাৎসর্য)-র প্রতীক। এর উপরেই ঘট স্থাপিত হয়। ঘটের ভিতরে জলপূর্ণ করা হয় তা সর্বতীর্থ সমন্বিত জল বা বরুণ হিসেবে রাখা হয়। জলের ভিতরে পঞ্চরত্ন দেওয়া হয়। এই পঞ্চরত্ন আসলে আমাদের পঞ্চেন্দ্রিয়ের প্রতীক। ঘটের উপরে পঞ্চপল্লব দেওয়া হয়, ব্রত ইত্যাদিতে পঞ্চপল্লব হিসেবে পাঁচটি পাতা সমন্বিত আমডাল ব্যবহৃত হলেও বৃহৎ আচারের পুজোতে সাধারণত যে পঞ্চপল্লব ব্যবহার করা হয় তাতে আম, যজ্ঞিডুমুর, বট, অশ্বত্থ ও পাকুড় ডাল ব্যবহার করা হয়; তন্ত্রোক্ত আচারে পঞ্চপল্লব হিসেবে বকুল ও কাঁঠাল পাতা ব্যবহার করা হয় বট-অশ্বত্থের জায়গায়। এই পঞ্চপল্লব যা নাড়ীর প্রতীক কিম্বা গ্রীবার প্রতীক, তার মাধ্যমে পঞ্চ বায়ুর প্রকাশ ঘটানো হয়। পঞ্চবায়ু হল পান, অপান, উদ্যান, সমান ও ব্যান। বৈদিক আচারে ঘটোপরি রাখা নারিকেলটিকে যোনি কিম্বা লিঙ্গের প্রতীক না মেনে মানুষের মস্তিষ্ক হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়। যে-কারণে বাংলার বাইরে প্রায় সর্বত্রই ছোবড়াহীন ঝুনো নারকেল কে-ই ঘটের উপরে দেখতে পাওয়া যায় এবং ঘটের উপরে লজ্জাগৌরীর পরিবর্তে স্বস্তিক আঁকা হয়, যা গণেশের প্রতীক। আবার কলকাতা ও সুন্দরবন-সংলগ্ন এলাকায় যেমন ধান্যস্থিত সশীষ ডাবটির শীষ পূজারীর দিকে রাখা হয় ঠিক তেমন মালদহ, দিনাজপুরে ডাবের শীষটি রাখা হয় পূজক এবং দেবতার সমান্তরালে। বৈষ্ণবাচার গুলিতে ঘটে লজ্জাগৌরীর পরিবর্তে ব্রজাঙ্কুশ চিহ্ন বা বৈষ্ণবতিলক চিহ্ন আঁকা হয়। তবে বৃহৎ পূজায় ঘটের চতুর্পার্শ্বে যে চারটি তিরকাঠি পোঁতা হয় এবং সূত্র বন্ধনে আবদ্ধ করা হয় সেই তিরকাঠি আসলে চতুর্বেদের প্রতীক বলে বৈদিকেরা আখ্যায়িত করে; সূত্রকে রাহুগ্রহের প্রতীক বলা হয় কোথাও কোথাও। ভেবিয়ার চড়কে চড়কবেদির চারপাশে যে তিরকাঠি গ্রথিত করা হয় তাকে লালসুতো ছাড়াও কুশদ্বারা বন্ধন করা হয়।

আরও পড়ুন
কালীপুজোর দিনই আরাধনা করা হয় লক্ষ্মীর ‘দিদি’ অলক্ষ্মীকে; কিন্তু কেন?

ঘটবিহীন পূজা বাংলায় প্রায় নেই বললেই চলে। শাক্তপূজায় তো ঘট অতিগুরুত্বপূর্ণ উপাচার। তবে, বিভিন্ন সতীপীঠ ও শিবলিঙ্গের সামনে এই ঘটের আবশ্যকতা নেই বা থাকে না। তবে এছাড়াও গোবরডাঙ্গার প্রসন্নময়ী কালী, রাজবলরহাটের রাজবল্লভী দেবীর সামনে ঘটের উপস্থিতি নেই। বৈষ্ণবেরা অষ্টপ্রহর নামকীর্তনের বেদিতে কিংবা দ্বার ঘট বাদ দিয়ে ঘটের বিশেষ ব্যবহার করে না; তাদের কাছে ঘটের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ দেবতার পাদপদ্ম। দেবতাবিহীন শুধুমাত্র ঘটপুজোর সংস্কৃতি বাংলার বহু জায়গায়, ঘরে প্রচলিত আছে। এদের মধ্যে নবদ্বীপের পোড়ামাতলার পোড়ামা, সাবর্ণ রায় চৌধুরীদের কুলদেবী চণ্ডী, কামারপুকুরে শ্রীরামকৃষ্ণের পরিবারের কুলদেবী শীতলা প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। আবার টাকির দেবী কুলেশ্বরী আসলে রজিপুরের কুলেশ্বরীতলায় কালীপূজার পর বিসর্জন হয়ে যাওয়া ঘট, যা পরে জেলেরা উদ্ধার করে। মূর্তি পরে এসেছে। প্রথম থেকেই অক্ষত ঘট শত শত বছর ধরে পুজো হয়ে আসছে, এমন ঘট কুলেশ্বরী মন্দির ছাড়াও আছে—তা সংগ্রামপুর কালীবাড়ির ঘট। কোনোদিন স্থান পরিবর্তনটুকুও করা হয়নি এ-ঘটের। ভেবিয়ার দক্ষিণরায় মন্দিরের কথা আগেই উল্লিখিত হয়েছে; এখানে গেলে আপনি দেখতে পাবেন বাংলার প্রাচীন মঙ্গলচণ্ডী ঘট; যার উপরিভাত নলাকার, মাঝে স্ফীত, নীচের ভাগ তুলনায় কম স্ফীত। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে ভবতারিণীর ঘট পরিবর্তন করা হয় প্রতিবছর দীপান্বিতা অমাবস্যার রাতে।

কলকাতার বিভিন্ন পরিবারের দুর্গাঘটের গ্রীবাদেশ গ্রামের ঘটের গ্রীবাদেশের তুলনায় সরু। বাংলার বহুল প্রচলিত শনিপূজায় গ্রামাঞ্চলে কালো রঙের মাটির ঘটের ব্যবহার কিম্বা লোহার ঘটের ব্যবহার বিশেষভাবে লক্ষণীয়। এছাড়া ইতুপুজোর ঘট বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সরার উপর মাটির ক্ষেত বানিয়ে সেখানে শস্যদানা ছড়িয়ে তার উপরে ইতুঘটের পুজো হয়। ওপারবাংলার মানুষেরা দুর্গোৎসবের দশমীর দিন সকালে যাত্রাঘট স্থাপন করে উঠোনে। কোথাও কোথাও ওপারের মানুষেরা বিশেষত বরিশালের মানুষেরা অষ্টমীতে দুর্গামণ্ডপে আম্রপল্লব সমেত লজ্জাগৌরী চিহ্নিত ঘট পুজো করিয়ে এনে রাখে ঘরে। সারাবছর তার পুজো হয়। তবে দশমীর যাত্রাঘটের সামনে দুটি পুঁটি মাছ রাখাও বিশেষ দ্রষ্টব্য। এই যাত্রাঘটে সর্বত্র আম্রশাখা দেওয়া হয় না। কোথাও কোথাও জলভরার পর যাত্রাঘটে দুটো বিল্বফল সমেত বিল্বডাল রাখা হয় ও তা রাতে বিসর্জন দেওয়া হয়। তবে ফরিদপুরের বাঙালদের মধ্যে একটি প্রচলিত প্রথা হল, দশমীর দিন আগের বছর পুজো হওয়া লক্ষ্মীসরার উপরে মাটির ক্ষেত্র তৈরী করে তাতে ধানবীজ রোপণ করা হয় ও তাতে একমাস ধরে রোজ জল দেওয়া হয়। কার্তিক পুজোর দিন সেই লক্ষ্মীসরার উপরের ধান্যক্ষেত্রে পাঁচটি আতপচাল ভর্তি ঘট পাতা হয়, ঘটের উপরে রাখা হয় জলপাই। তার উপর গামছার আচ্ছাদন রেখে পুজো করা হয়। আবার কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পূজায় ঘট বিসর্জন পর্বটি সকালে হয়। পাল্কিতে চড়িয়ে ঘট নিয়ে যাওয়া হয় গঙ্গা অভিমুখে। উপনয়ন, ব্রত থেকে বিবাহ, অন্নপ্রাশন—বাঙালির মঙ্গলাচারে গুরুত্বপূর্ণতম অঙ্গ এই ঘট।

শ্রীগুরু সংঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীশ্রীমদ্ দুর্গাপ্রসন্ন পরমহংসদেব তার শিষ্যদের পরিবারে মঙ্গলঘট ব্যবহারের রীতি চালু করেন। মঙ্গলঘটটি গুরুশক্তি হিসেবে বিবেচ্য। প্রতিদিন তাঁর শিষ্যরা রান্নার আগে আগ চাল কিছুটা মঙ্গলঘটে অর্পণ করেন। মাসিক চাল জমা হয়ে আশ্রমে চলে যায়। সেই চাল থেকে তৈরি হওয়া অন্ন রোজ আশ্রমে আসা হাজার হাজার শিষ্য ও ভক্তদের কাছে প্রসাদ হিসেবে দেওয়া হয় দ্বিপ্রহরে ও রাতে। এই মঙ্গলঘটের সেবা ছাড়া এই সংঘের সন্ততিরা নিত্য অন্নগ্রহণ করেন না। যদিও গৃহস্থের মঙ্গলঘটের সেবার সঙ্গে পরমহংসদেব গীতায় বর্ণিত ঈশ্বরের কাছে সমস্তকিছু সমর্পণের ব্যাখ্যাটি দেন, বাস্তবে দেখা যায়, দেশভাগ-পরবর্তী সময়ে হাজার হাজার নিরন্ন উদ্বাস্তু মানুষের কাছে পৌঁছেছে মঙ্গলঘটের সংগৃহীত চালের তৈরি অন্নপ্রসাদ। এই মঙ্গলঘটের উপরেও সিঁদুরের লজ্জাগৌরী পুত্তলিকা আঁকা হয়। তবে সেই পুত্তলিকার হাতদুটি নিম্নদিকে ধাবিত। এই মঙ্গলঘট এক অসাধারণ যূথবদ্ধতার সংস্কৃতির প্রতীক।

বাংলার বহুল প্রচলিত শীতলাপুজোগুলিতে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে চাল, টাকাপয়সা আনবার সময় যে কুলো মাথায় নিয়ে মহিলারা যান, তাতেও ঘটের উপস্থিতি দেখতে পাওয়া যায়। ঘটের এই বহুমাত্রিক প্রয়োগকে শুধু ধর্মপালনের দিক থেকে নয়, আমাদের সংস্কৃতির এক অতিগুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ব্যাখ্যা করা যায়। মনে করুন দুর্গাদশমীর সকালে পুরোহিত ঘট নাড়িয়ে দিচ্ছে, আপনার বুক নড়ে উঠছে বিদায়বেদনার প্লাবনে। অথবা, অন্তিমে শ্মশানকৃত্যের শেষে অগ্নিকর্তা ফাটিয়ে ফেলছে ঘট, পিছন ফিরে বাড়ি আসছে—ভাঙা ঘটের সঙ্গে কী রেখে আসছে?

অনন্তমায়া…

Powered by Froala Editor