কোভিডের প্রকোপে যক্ষ্মা-নিরাময়ে অবহেলা ভারতের, নতুন বছরে আক্রান্ত বাড়বে ১০ লক্ষ!

বিশ্বের সমস্ত চিকিৎসকদেরই এখন প্রধান চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনাভাইরাস মহামারী। আর এর মধ্যেই চুপিসারে মাথা চাড়া দিচ্ছে এক অন্য অসুখের ভয়াবহতা, সতর্ক করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতের যক্ষ্মা দূরীকরণ তো দূরের কথা, আগামী এক বছরের মধ্যে এক ধাক্কায় ১০ লক্ষ বাড়বে আক্রান্তের সংখ্যা। গতকাল হু-এর তরফে এমনটাই পূর্বাভাস দিলেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের প্রাক্তন জেনারেল সৌম্য স্বামীনাথন।

২০১৯ সালের পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, সে-বছর পৃথিবীতে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন প্রায় ১ কোটি মানুষ। যার মধ্যে প্রাণ যায় ১৪ লক্ষ মানুষের। আশ্চর্যের বিষয়, মোট আক্রান্তের মধ্যে ২৭ লক্ষ মানুষই ভারতীয়। অর্থাৎ যার পরিমাণ বৈশ্বিক সংক্রমণের এক চতুর্থাংশেরও বেশি। ২০২০ সালের শুরুতেই ভারত পরিকল্পনা নিয়েছিল ২০২৫-এর মধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যাকে কমিয়ে আনবে ১ লক্ষের মধ্যে। তবে সে পরিকল্পনায় জল ঢেলে দিয়েছে কোভিড-১৯। ২০২৫-এ ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা বর্তমানের থেকেও ১ লক্ষ বেড়ে যাবে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

স্বামীনাথন জানান, মহামারীর কারণে টিবি শনাক্তকরণের পরীক্ষায় ফাঁক পড়েছে অনেকটাই। প্রায় ৫০-৬০ শতাংশ ঘটনাই সামনে আসছে না চিকিৎসকদের। ফলে নিশ্চুপেই ছড়াচ্ছে যক্ষ্মা সংক্রমণ। তবে টিবি নির্মূলীকরণের প্রকল্প বিশ বাঁও জলে থাকলেও, একেবারে আশা হারাচ্ছেন না তিনি। মহামারীর আবহ চিকিৎসাবিজ্ঞানের প্রযুক্তির নতুন জোয়ার এনেছে বলেই বিশ্বাস তাঁর। আরটিপিসিআর যন্ত্র থেকে শুরু করে কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং এবং অ্যাপের মাধ্যমে আক্রান্তদের অবস্থান নির্ণয়ের মতো প্রযুক্তিকে যক্ষ্মার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা যেতে পারে। তাতে অনেকটাই এড়ানো যাবে আগামী দুরাবস্থাকে, এ ব্যাপারে আশাবাদী তিনি। এখন যক্ষ্মা-মোকাবিলা করতে কতটা তৎপরতা দেখাবে সরকার, সেটাই দেখার...

Powered by Froala Editor