‘ওয়াক উথ সন’, কালো চামড়ার মানুষদের পাশে-পাশে হাঁটলেন প্রতিবেশী শেতাঙ্গরাও

২৯ বছরের সন ড্রোমগুল, আমেরিকার নাশভিলা শহরের বাসিন্দা। বয়স যথেষ্ট বাড়লেও, এখনও একটা ভয় তাঁকে সর্বত্র তাড়া করে বেড়ায়। ভয়টা নতুন নয়, কিন্তু কিছুদিন থেকে সেটা বাড়ছে। সবসময় মনে হচ্ছে, এই সাদা চামড়া অধ্যুষিত আমেরিকায় তাঁর মতো নিগ্রোদের কোনো অধিকার নেই। তাঁরা সেই দেশে সম্পূর্ণ ব্রাত্য। এমনকি মাঝেমাঝে তাঁর মনে হয়, কেউ যদি হঠাৎ এসে তাঁকে মেরে ফেলে! আর এর মধ্যেই জর্জ ফ্লয়েডের হত্যাকাণ্ড বুঝিয়ে দিল, তাঁর আশঙ্কা অমূলক নয়। এখনও আমেরিকায় বর্ণবিদ্বেষ এতটাই ভয়ঙ্কর আকার নিতে পারে।

জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পর সমস্ত আমেরিকা জুড়ে উঠেছে প্রতিবাদের ঝড়। উঠে এসেছে কালো চামড়ার মানুষদের প্রকৃত সামাজিক অবস্থানের চিত্র, তাঁদের নিরাপত্তার অভাবের ছবি। আর এসবের মধ্যেই সপ্তাহ তিনেক আগে নিজের ভয়ের কথা সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন সন। সেখানে তিনি বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন, তাঁর পরিচিত শহরটা কীভাবে ধীরে ধীরে বদলে গিয়েছে শেষ কয়েক বছরে। শহরের বিলাসবহুল জীবনের খরচ সামলাতে না পেরে অনেক কালো চামড়ার মানুষ এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছেন। ক্রমশ সাদা চামড়ার মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। আর তাঁদের সবার মধ্যেই একটা আত্মকেন্দ্রিক মানসিকতার প্রকাশ দেখেছেন সন। ফলে তাঁর আতঙ্ক ক্রমশ বেড়েই গিয়েছে।

তবে জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর পরেই কালো চামড়ার মানুষদের সামাজিক সুরক্ষার বিষয়ে সচেতন হয়ে উঠেছেন আমেরিকার মানুষ। আর তাই সন এখন আর একা নন। তাঁর যাতে আর রাস্তায় বেরোতে ভয় না করে, তাই তাঁর সঙ্গে রাস্তায় নেমেছেন প্রায় ৭৫ জন প্রতিবেশী। এঁদের মধ্যে অনেকে সাদা চামড়ার মানুষও ছিলেন। কিন্তু প্রত্যেকেই প্রত্যেকের প্রতিবেশী, এটাই তাঁদের শেষ পরিচয়। আর এভাবেই উৎসবের মতো করে অনুষ্ঠিত হল 'ওয়াক উইথ সন'। যে অনুষ্ঠান আমেরিকার বর্ণবিদ্বেষী চেহারাটা অনেকটাই বদলে দিতে সক্ষম হয়েছে। কালো চামড়ার মানুষদের সুরক্ষা দিতে এভাবেই এগিয়ে আসুন সাদা চামড়ার মানুষরাও। ঘৃণা-বিদ্বেষহীন সমাজ গড়ে উঠুক এভাবেই।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
ভালোবাসার কাছে সবই তুচ্ছ, বর্ণবৈষম্য সরিয়ে ঘর বেঁধেছেন এই বাঙালিরাও

More From Author See More

Latest News See More