কাচের তৈরি বর্জ্য থেকে কৃত্রিম বালি, দূষণরোধের পথ দেখাচ্ছে মার্কিন সংস্থা

সাম্প্রতিক সময়ে গোটা বিশ্বের অন্যতম আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে প্লাস্টিক দূষণ। তবে দূষণের ক্ষেত্রে প্রকৃতিতে প্লাস্টিকের থেকেও আরও ভয়াবহ প্রভাব ফেলে কাচ। কেননা, কাচের তৈরি কোনো সামগ্রী সম্পূর্ণভাবে বিয়োজন হতে সময় নেয় প্রায় ১০ লক্ষ বছর। এবার এই দূষণেরই অভিনব সমাধান দিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এবার কাচকে কৃত্রিম বালিতে (Artificial Sand) বদলে ফেলল তারা।

গ্লাস হাফ ফুল। বিশ্বের বৃহত্তম গ্লাস রিসাইক্লিং কর্মসূচির পিছনে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাত। কয়েক বছর আগের কথা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম সমস্যা হয়ে উঠেছিল ওয়াইন ও অন্যান্য অ্যালকোহলজাত পানীয়ের কাচের তৈরি বোতল। এই ধরনের বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছিল সে-দেশের প্রশাসন। অধিকাংশ মার্কিন প্রদেশেই প্রায় অকেজ অবস্থায় পড়েছিল পুনর্ব্যবহার প্রকল্পগুলি। 

প্রাথমিকভাবে কাচ দূষণ নিয়ে সচেতনতা প্রচারেই নেমেছিল নিউ অরলিন্সের এই সংস্থাটি। প্রশাসনের কাছে কাচজাত বর্জ্যের ক্ষতিকর প্রভাবগুলি তুলে ধরাই ছিল তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। তবে সেই চেষ্টায় সুফল মেলেনি খুব একটা। তারপরই সক্রিয়ভাবে কাচ পুনর্ব্যবহারের প্রকল্প নেয় সংস্থাটি। বলার অপেক্ষা থাকে না, এমন একটি প্রকল্পের জন্য ব্যাপক পরিমাণ অর্থায়নের প্রয়োজন। কীভাবে হল সেই অর্থের সংস্থান? শুনলে অবাক হতে হয়, গোটা প্রক্রিয়াটাই সম্পূর্ণভাবে পাবলিক ফান্ডেড। অর্থাৎ, বিভিন্ন পরিবেশ সংগঠন এবং অর্থশালী মানুষের অনুদানের ওপরেই দাঁড়িয়ে রয়েছে এই প্রকল্প। 

তহবিলের একটি অংশ ব্যবহৃত হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাচের তৈরি বর্জ্য পদার্থ সংগ্রহে। সেখান থেকে পৃথক করা হয় ধাতব এবং কর্ক-জাতীয় সামগ্রী। তারপর শুরু হয় প্রক্রিয়াকরণ। উচ্চ চাপে গুড়িয়ে ফেলা হয় কাচের সামগ্রীগুলিকে। তার মধ্যে থেকে দূষক পদার্থগুলিকে পৃথক করে পাল্ভারাইজ করা হয় সেই কাচ গুঁড়ো। একদিকে যেমন এই ধূলিকণা দিয়ে পুনর্নিমিত হয় ব্যবহারযোগ্য কাচ, তেমনই তৈরি হয় কৃত্রিম বালিও।  

বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভূমিক্ষয় প্রতিরোধে বহুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে কাচ-নির্মিত এই কৃত্রিম বালি। এবং তা পরিবেশের পক্ষে তুলনামূলকভাবে অনেক কম ক্ষতিকর বলেই অভিমত গবেষকদের। আগামীদিনে গোটা বিশ্বে এই ধরনের পুনর্ব্যবহার প্রকল্প দূষণের মাত্রাকে শূন্যে নামিয়ে আনতে পারে বলেই জানাচ্ছে মার্কিন সংস্থাটি। এখন দেখার তাদের এই উদ্যোগকে ত্বরান্বিত করতে প্রশাসনও এগিয়ে আসে কিনা... 

Powered by Froala Editor

More From Author See More