প্রতিদিন খাবার রেঁধে ৮৫ জন পড়ুয়ার বাড়িতে পৌছে দিচ্ছেন ইংল্যান্ডের শিক্ষক

মহামারী করোনার পাশাপাশি গোটা পৃথিবীকেই গ্রাস করেছে চরম দারিদ্র্য। আর এই সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর শিক্ষা দিতে পারেন যিনি, তিনিই তো প্রকৃত শিক্ষক। ইংল্যান্ডের ম্যাঞ্চেস্টার শহরের জেন পাওয়েল তেমনই এক শিক্ষক। ছাত্রছাত্রীদের কাছে তিনি বন্ধুও। আর তাই এই মহামারীর সময় প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর জন্যই ন্যূনতম খাবারের ব্যবস্থা নিয়ে তিনি হাজির হয়েছেন প্রত্যেকের বাড়ির সামনে।

করোনা মোকাবিলায় লকডাউন ঘোষণা করার পরেই পাওয়েল বুঝতে পারেন, এই কঠিন পরিস্থিতিতে অনেকের পক্ষেই খাবার জোগাড় করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। তাঁর একার পক্ষে হয়তো কিছুই করা সম্ভব নয়। কিন্তু তবু তো হাল ছেড়ে দিতে রাজি নন সবাই। তাই শেষ পর্যন্ত শুরু হল অসম্ভবকে সম্ভব করার প্রচেষ্টা। প্রতিদিন অন্তত ৮৫টি বাক্সে লাঞ্চ তৈরি করে বেরিয়ে পরেছেন তিনি। আর এভাবেই দিনে অন্তত ৭.৫ মাইল পথ পায়ে হেঁটে এগিয়ে গিয়েছেন। কোনো ছাত্রছাত্রীকেই যে অভুক্ত থাকতে দিতে পারেন না তিনি।

গত ১৭ জুলাই পর্যন্ত এই রুটিনে কোনো ছেদ ছিল না। প্রায় ৪ টন খাবারের বোঝা নিয়ে এতটা পথ হাঁটা সহজ নয়। কিন্তু সমস্ত ক্লান্তি ভুলিয়ে দিয়েছে ছোট ছোট পড়ুয়াদের হাসি মুখ। এর মধ্যে অবশ্য পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে। তবে এখনও দারিদ্র্যের থাবা এগিয়ে আসছে অনেকের মাথার উপর। তাই নিজের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে, মনে করছেন না জেন পাওয়েল। বরং এবার তিনি আরও বড় পরিসরে কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান। এবার আর পায়ে হেঁটে নয়, সাইকেলে চেপে পৌঁছে যেতে চান ১৫০০ মাইল। জেন মনে করেন, এই পরিস্থিতিতে সমস্ত পড়ুয়াদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে হবে শিক্ষকদেরই। তবে তাঁর কাছে এটা খুব স্বাভাবিক হলেও, ইংল্যান্ডের মানুষ এই আশ্চর্য কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। ইংল্যান্ডের কাছে এখন তাঁর আরেক নাম ‘হিরো টিচার’।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
ঘরে টাকা নেই, পেটে নেই খাবার; দারিদ্র্যে ধুঁকছে ‘মাউন্টেন ম্যান’ দশরথ মাঝির পরিবার