আষাঢ় ও ইতিহাসের সম্ভার নিয়ে পর্যটকের অপেক্ষায় পুরুলিয়ার ‘গাছবাড়ি’

প্রতি বছরের মতো এসেছে বর্ষা। আর সঙ্গে সঙ্গে ময়ূরের মতো নেচে উঠেছে প্রকৃতিপ্রিয় মানুষের মন। এই বর্ষার দিনগুলিতে একটু নিরিবিলি বন্য পরিবেশে যেতে না পারলে অস্থির লাগে অনেকেরই। আর ঠিক এই সময়েই লকডাউন শিথিল হয়ে শুরু হয়েছে আনলক-১ পর্যায়। সেইসঙ্গে খুলে গিয়েছে সমস্ত পর্যটনকেন্দ্র। তবে অবশ্যই জরুরি নিরাপত্তা নিয়ে।

এই পরিস্থিতিতেই নতুন করে পর্যটকদের আকর্ষণ করতে উদ্যোগ নিল পুরুলিয়ার মাঠাবুরু পাহাড়ের গাছবাড়ি। যে বাঙালির পায়ের তলায় সর্ষে, তার কাছে নতুন করে পরিচয় দেওয়ার কিছু নেই। পুরুলিয়ার পাহাড়ের গায়ে অসংখ্য শালগাছের উপর ভর করে রাত্রিবাসের জায়গার নাম গাছবাড়ি। বিশেষ করে বর্ষার সময়েই প্রকৃতির রূপ দেখতে সেখানে ভিড় হয় বেশি। আর এবারে লকডাউনের মন্দা কাটিয়ে নতুন করে সেজে ওঠার আমেজ তো রয়েছেই।

রবিবার নবরূপে সজ্জিত গাছবাড়ির দরজা খুলে দিলেন রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, প্রকৃতি পর্যটনকে তুলে ধরার উদ্দেশ্যেই ঢেলে সাজানো হয়েছে পরিকাঠামো। সেই সঙ্গে পর্যটকদের মনোরঞ্জনের জন্য কাছেই খোলা হয়েছে একটি ছো-মুখোশ বিপণন কেন্দ্র। এখান থেকে অনেক শিল্পী রোজগারের মুখ দেখবেন বলে আশাবাদী তিনি। তাছাড়া এবার রয়েছে আরেক বাড়তি আকর্ষণ। প্রকৃতির রূপের সঙ্গে সঙ্গে পর্যটকরা সংগ্রহ করতে পারবেন ইতিহাসের গন্ধও। পুরুলিয়ার ইতিহাস মানেই আদিবাসীদের বীরত্ব আর সাহসিকতার ইতিহাস। তেমনই একজন বীর, রাজা মাঠা সিং-এর নাম অনুসারে পাহাড় এবং জনপদের নাম মাঠা। সেই রাজার কাহিনীও এবার তুলে ধরা হবে ডিসপ্লে বোর্ডের মাধ্যমে।

সব মিলিয়ে এবারে পর্যটকদের আকর্ষণ করার ব্যাপারে পুরোপুরি প্রস্তুত গাছবাড়ি। আর লকডাউনের অবসাদ কাটিয়ে মানুষ সেখানে প্রকৃতির কাছে আশ্রয় খুঁজতে যাবেন নিশ্চই। এভাবেই একটু একটু করে প্রাণ ফিরে পেতে চলেছে লকডাউনে ভেঙে পড়া পর্যটন শিল্পও।

Powered by Froala Editor