বিশ্বের ক্ষুদ্রতম আন্তর্জাতিক সেতু, দৈর্ঘ্য মাত্র ১০.৪ ফুট!

কাঠের পাটাতন আর বাঁশ দিয়ে তৈরি ছোট্ট একটা সাঁকো। ঠিক গ্রামেগঞ্জে যেমন দেখা যায়। দৈর্ঘ্যও তথৈবচ। মাত্র ১০.৪ ফুট। কিন্তু এই সাঁকো পেরিয়েই পৌঁছে যাওয়া যায় এক দেশ থেকে আরেক দেশে। হ্যাঁ, ইন্টারন্যাশানাল ব্রিজ। ভাবতে সত্যিই অবাক লাগে। খোদ ইউরোপের বুকেই অবস্থিত এই ব্রিজ, যার নাম ‘এল ম্যাক্রো’। আর এই ব্রিজ যুক্ত করে রেখেছে স্পেন এবং পর্তুগালকে।

২০০৮ সালে যখন গ্রামবাসীরা এই ব্রিজ তৈরির কাজে হাত দিয়েছিল, তখন রীতিমতো অবাক হয়েছিল প্রশাসন। অবশ্য কোনোরকম বাধা কেউ দেয়নি। বরং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের তরফ থেকে আর্থিক সাহায্যও করা হয়। তবে এই ব্রিজ তৈরির সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক অতি পুরনো সম্পর্কের ইতিহাস। পর্তুগালের ভার্জিয়া গ্রান্দে এবং স্পেনের এক্ট্রিমাদুরা গ্রামদুটির মধ্যে সম্পর্ক অতি পুরনো। এই সেতু সেই যোগাযোগকে সহজ করেছে মাত্র। দুটি পৃথক দেশের অংশ হয়েও বারবার এক গ্রামের মানুষ অন্য গ্রামের প্রতিবেশী হয়েই দাঁড়িয়েছেন। কাঁটাতারে ভাগ করা মানচিত্রের বাইরে এভাবেই তো টিকে থাকে মানবিকতা।

অবশ্য চটপট গুগলে উত্তর খুঁজতে গেলে দেখবেন, পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম আন্তর্জাতিক ব্রিজ হিসাবে অন্য নাম দেখাচ্ছে। দেখাবে কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অবস্থিত জাভিকন সেতুর নাম। অথচ তার দৈর্ঘ্য ৩২ ফুট। কিন্তু ২০০৮ সালে তৈরির পরেও এল ম্যাক্রো কোনো রেকর্ড বুকে নাম তুলতে পারেনি। গড়ে ওঠেনি কোনো পর্যটন শিল্পও। কোনো রেললাইন তো দূরের কথা, সড়ক পথেও এই ব্রিজে পৌঁছানো যাবে না। পৌঁছতে হবে গ্রামের কাঁচা রাস্তা পেরিয়ে। অখ্যাতির অন্তরালে মানবতার প্রতীক হয়ে এভাবেই দাঁড়িয়ে থাকবে এল ম্যাক্রো।

Powered by Froala Editor