৩ হাজার বছর পর অস্ট্রেলিয়ায় ফিরছে তাসমানিয়ান ডেভিল

ছোট্ট একটি প্রাণী, ওজন খুব বেশি হলে ৮ কিলোগ্রাম। কিন্তু এই ছোট্ট প্রাণীটাই এমন দুঃসাহসিকভাবে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে শিকারের উপর, যে আজও অস্ট্রেলিয়ায় সে এক কিংবদন্তি নাম। সাধারণ মানুষের কাছে প্রাণীটি তাসমানিয়ান ডেভিল নামে পরিচিত। তবে নাম ভয়াবহ হলেও চট করে মানুষকে তারা আক্রমণ করে না বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। আসলে ৩ হাজার বছর আগে অস্ট্রেলিয়ার বুনো কুকুর ডিংগোর তাড়া খেয়ে মূল ভূখণ্ড থেকে বিদায় নেয় এই প্রাণী। আর তার পর থেকেই একটু একটু করে আতঙ্কের চেহারা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। তবে এর মধ্যেই সিডনি শহরের একটি অভয়ারণ্যে ১১টি তাসমানিয়ান ডেভিলকে নিয়ে এল অস্ট্রেলিয়ার প্রাণী সুরক্ষা বিষয়ক সংস্থা অজি আর্ক।

এই উদ্যোগের পিছনে অবশ্য একটি বিশেষ কারণ আছে। দ্বীপপুঞ্জ অঞ্চলে এতদিন এতদিন বেশ স্বচ্ছন্দেই ছিল এই প্রাণীটি। কিন্তু ১৯৯৬ সাল থেকে হঠাৎ এক ভয়ঙ্কর রোগ ছড়িয়ে পড়ে এদের মধ্যে। মুখের মধ্যে একেকটি অংশের মাংসপেশি হঠাৎ বেড়ে উঠতে শুরু করে। ঠিক টিউমারের মতো। আর এই ভয়ানক রোগের কবলে ক্রমশ প্রাণ হারাচ্ছে একের পর এক তাসমানিয়ান ডেভিল। ১৯৯৬ সালে বনাঞ্চলে ১.৫ লক্ষ ডেভিলের অস্তিত্বের কথা জানা ছিল। বর্তমানে সেই সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজারেরও কম। অথচ এই রোগের প্রকৃত কারণ এখনও খুঁজে পাননি বিশেষজ্ঞরা। তবে পুরনো বাসভূমি থেকে অন্য কোনো জঙ্গলে তাদের পুনর্বাসিত করা গেলে হয়তো রোগের প্রকোপ কমতে পারে। অন্তত তেমনটাই মনে করছেন অজি আর্কের প্রেসিডেন্ট টিম ফকনার।

পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ার বনাঞ্চলের বাস্তুতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতেও এই প্রাণী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছেন ফকনার। অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা বুনো শেয়াল এবং বুনো কুকুরের তাণ্ডবে অনেক প্রাণীই বিপর্যস্ত। তাসমানিয়ান ডেভিল এই দুই প্রাণীর তাণ্ডব অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তিনি। ৩ হাজার বছর পর ১১টি ডেভিল-শিশু পা রাখল অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখণ্ডে। হয়তো এর উপরেই নির্ভর করছে অসংখ্য বিপন্ন প্রাণীর ভবিষ্যৎ।

Powered by Froala Editor