সুশান্তের মৃত্যুর ১৩ দিন পর ‘এপিটাফ’ লিখল পরিবার, পড়ুন অনুবাদ

গত ১৪ জুন প্রয়াত হয়েছেন অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত। তাঁর এই আকস্মিক মৃত্যুতে যেমন শোকস্তব্ধ হয়েছিল চলচ্চিত্রমহল এবং অনুরাগীরা, তেমনই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছিলেন তাঁর পরিবারের সদস্যরাও। এই ঘটনা মেনে নেওয়াটাই কঠিন ছিল তাঁদের প্রত্যেকের কাছে। মৃত্যুর ১৩ দিন পর, আজ প্রকাশ্যে এল তাঁর পরিবারের তরফে একটি লিখিত বিবৃতি। কী বার্তা রয়েছে সেই এপিটাফে? দেখে নেওয়া যাক...

“সুশান্তকে ঘিরে যে পৃথিবী, আমাদের কাছে তাই ছিল ফুলের বাগান।    

সুশান্ত ছিলেন বাক্যবাগীশ, মুক্তমনা এবং অসম্ভব উজ্জ্বল একটি ব্যক্তিত্ব। এমন কোনো বিষয় ছিল না, যার ব্যাপারে জানার আগ্রহের অবকাশ ছিল তাঁর। সুশান্তের স্বপ্নগুলো ছিল দিগন্তহীন। সেই স্বপ্নপূরণের জন্যই সুশান্ত ছুটে বেড়াতেন সিংহ-হৃদয়ে। তিনি হাসতে জানতেন খোলা মনে। এই পরিবারের কাছে প্রাণোচ্ছল সুশান্ত সিং রাজপুত ছিলেন গর্ব আর অনুপ্রেরণার সম্মিলিত নাম। টেলিস্কোপই ছিল ওঁর নিত্যদিনের নিজস্ব পৃথিবীর অন্তরঙ্গ বন্ধু, যাকে সঙ্গে নিয়েই সুশান্ত ঘুরে বেড়াতেন মহাজাগতিক নক্ষত্রের রাজ্যে।

সুশান্ত আর নেই, আমরা মানতে পারিনি এখনও। ওঁর সহজ-সরল অফুরান হাসির ছটা আর ভাসাবে না কাউকে, এখনো অবিশ্বাস্য আমাদের কাছে। ভাবতে পারাও কঠিন, আমরা আর দেখতে পাব না ওঁর চাহনির গভীরতা। দেখতে পাব না বিজ্ঞান নিয়েও ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটানো অদম্য কৌতূহলী সুশান্তকে। সুশান্তের এই চলে যাওয়া চিরকালীন এক শূন্যতায় রেখে গেল গোটা পরিবারকে।

আরও পড়ুন
পড়ে রইল একগুচ্ছ ব্যতিক্রমী ইচ্ছে, ভ্যান গঘের ‘স্টারি নাইট’-এর মতোই ছিলেন সুশান্ত

সুশান্তের কাছে তাঁর প্রত্যেক অনুরাগীই ছিলেন জীবনের এক-একটি অঙ্গ। তিনি ভালবাসতেন এবং মুগ্ধ করে রাখতে চাইতেন তাঁদের। তাঁদের ভালবাসাও এতদিন প্রাণবন্ত রেখেছিল আমাদের ফুলের বাগিচাকে, সেই ভালবাসার কাছে আমরা ঋণী।

আরও পড়ুন
প্রেসিডেন্সিতে ‘রেকি করতে’ আচমকা ঢুকলেন সুশান্ত, আড্ডা জমালেন হোস্টেলের ঘরে বসে

সুশান্তকে শ্রদ্ধা এবং সম্মান জানাতে, পরিবারের তরফে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সুশান্ত সিং রাজপুত ফাউন্ডেশন তৈরির। চলচ্চিত্র, খেলা, বিজ্ঞান— সুশান্তের জীবন ঘিরে যে জগতগুলি বিরাজমান, সেই পৃথিবীর স্বপ্রতিভ তরুণ নক্ষত্রদেরই বিকাশের সাহায্য করবে এই ফাউন্ডেশন। 

পাটনার রাজীবনগরে সুশান্তের বেড়ে ওঠা— ফাউন্ডেশন তৈরির পাশাপাশিই, শৈশবমাখা সেই শহরে তাঁর জন্য তৈরি করা হবে স্মৃতিসৌধ। থাকবে তাঁর ব্যক্তিগত সামগ্রী নিয়ে একটি সংগ্রহশালাও। তাঁর সংগ্রহের হাজার হাজার বই, টেলিস্কোপ, ফ্লাইট-সিম্যুলেটর ভবিষ্যতেও উদ্যম জোগাবে তাঁর ভক্ত-অনুরাগীদের। স্মৃতিচিহ্ন হিসাবেই আমরা চালু রাখব ওঁর ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং ট্যুইটার প্রোফাইল; যা ধরে রাখবে ওঁর কীর্তিকে, বাঁচিয়ে রাখবে ওঁকে। 

সবশেষে সকলকে ধন্যবাদ, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সুশান্তের পাশে থাকার জন্য, প্রার্থনা করার জন্য।”

Powered by Froala Editor