ইসলামিক রাষ্ট্রের পরিচয় মুছে, ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ সুদানের

দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের পর সুদান পিওপল’স লিবারেশন (নর্থ)-এর সঙ্গে রাষ্ট্রের সমঝোতার পথ তৈরি হয়েছিল গত বছরেই। কিন্তু তার পরেও মৈত্রী প্রস্তাবে সই করতে অস্বীকার করেন এই সশস্ত্র সংগঠনের সদস্যরা। কারণ? কারণ তাঁরা এমন কোনো রাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি সাক্ষর করবেন না যে রাষ্ট্রের ধর্মীয় পরিচয় আছে। হ্যাঁ, সুদানকে একটা ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসাবেই দেখতে চেয়েছিলেন তাঁরা। আর সম্প্রতি সেই স্বপ্ন স্বার্থক হল। শুক্রবার দুপক্ষের চুক্তির মধ্যে দিয়েই স্থির হল, সুদান আর কোনো ইসলামিক রাষ্ট্র নয়। এখন থেকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসাবেই পরিচিতি পাবে সুদান।

১৯৮৯ বাসির শাসনের শুরু থেকেই ইসলামিক আইনের ভিত্তিতে গড়ে ওঠে সুদানের সংবিধান। এর জন্য আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সমালোচনার মুখেও পড়তে হয় সুদানকে। এমনকি সুদানের বিরুদ্ধে বারবার সন্ত্রাসবাদের অভিযোগও তুলেছে আমেরিকা। অন্যদিকে সশস্ত্র বিপ্লবী শক্তি পিওপল’স লিবারেশনের বিরোধিতা করেছে সুদান সরকার এবং আমেরিকাও। কিন্তু দেশের সাধারণ মানুষের সমর্থন পেয়েছিলেন তাঁরা। আর তাই শেষ পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলনের কাছে নতিস্বীকার করতে হল রাষ্ট্রশক্তিকে।

শুক্রবার চুক্তি সাক্ষরের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন সুদানের প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লা হ্যামদক এবং পিওপল’স লিবারেশনের নেতা আজিজ আল-হিলু। দুজনেই একবাক্যে স্বীকার করে নেন সমস্ত মানুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। ধর্ম যার যার ব্যক্তিগত, কিন্তু রাষ্ট্রের দায়িত্ব সব সময় মুক্তচিন্তার পক্ষে থাকা। আর ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসাবে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও সুদানের ভাবমূর্তি উন্নত হবে বলে মনে করছেন প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে দীর্ঘ সশস্ত্র লড়াইয়ের অবসান নিঃসন্দেহে খুশির খবর।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
সংবিধান থেকে বাদ পড়ুক ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’, ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ গঠনের উদ্যোগ