মাটি বা জলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে পারবেন কৃষকই, বৈপ্লবিক আবিষ্কার দুই বাঙালির

জমিতে ফসল উৎপাদন বাড়াতে গেলে মাটিকে ভালোভাবে চিনতে হয়। মাছ চাষের ক্ষেত্রেও চিনতে হয় পুকুরের জলকে। তবে তার জন্য প্রয়োজন বিস্তর পরীক্ষানিরীক্ষা। অনেক সময়েই দেখা যায় জমিতে ঠিকমতো ফসল ফলছে না। আবার অনুপযুক্ত সাড়ের ব্যবহারে সমস্যা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। মাছ চাষের ক্ষেত্রেও ঘটে একই ঘটনা। তবে এবার খুব সহজেই সেই সমস্যার থেকে মুক্তি পেতে চলেছেন কৃষকরা। সৌজন্যে আইআইটি খড়গপুরের দুই প্রাক্তন ছাত্রের তৈরি যন্ত্র ‘সয়েলসাথী’।

ইতিমধ্যে রাজ্য পঞ্চায়েত দপ্তরের অধীনস্থ সামগ্রিক এলাকা উন্নয়ন পর্ষদের ২৩টি প্রকল্পের অধীনস্থ খামারে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে ছোট্ট এবং সহজে বহনযোগ্য এই যন্ত্র। এর মধ্যে মাটি বা জলের নমুনা রাখলেই বোঝা যাবে তাতে কোন উপাদানের আধিক্য বা কোন উপাদানের ঘাটতি রয়েছে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যাবে সহজেই। আর ইতিমধ্যে এই যন্ত্র ব্যবহার করে সাফল্য মিলেছে বলেও জানিয়েছেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। আগামী দিনে যাতে সমস্ত পঞ্চায়েতের কৃষকরা এই কাজের সুফল পান সেবিষয়ে শীঘ্র ব্যবস্থা নিতে চলেছে সরকার।

রাজীব মণ্ডল ও পার্থ চক্রবর্তী ১৯৯৪ সালে খড়গপুর আইআইটি থেকে পাশ করে বিদেশে যান উচ্চশিক্ষার জন্য। ফিরে এসে দুজনে একসঙ্গে গবেষণা শুরু করেন। আর সেই গবেষণার সূত্রেই জন্ম নেয় ‘সয়েলসাথী’ যন্ত্র। তাঁরা জানিয়েছেন, ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই যন্ত্র কেনে। এরপর আরও ৬টি রাজ্য থেকে তাঁদের যন্ত্র কেনা হয়েছে। তবে পশ্চিমবঙ্গেই প্রথম এই যন্ত্রের ব্যবহার শুরু হয়েছে।

সামগ্রিক এলাকা উন্নয়ন পর্ষদের অধীনস্থ খামারের কৃষকরাও জানিয়েছেন, এই যন্ত্র ব্যবহার করে তাঁরা যথেষ্ট সুফল পেয়েছেন। তবে মাটি বা জলের অনেক উপাদানের সঙ্গেই সঠিকভাবে পরিচিত নন রাজ্যের কৃষকরা। তাই এই যন্ত্র ব্যবহারের আগে উপযুক্ত প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। সমস্ত কৃষকের জন্য এই যন্ত্রের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও সরকারই করবে বলে জানানো হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার যে মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ করে তুলতে পারে, বিজ্ঞান শুধুই অভিশাপ নয়; সেকথাই আবারও প্রমাণ করলেন দুই বাঙালি বিজ্ঞানী।

আরও পড়ুন
কৃষিক্ষেত্রে বরাদ্দ বৃদ্ধিতে নারাজ অর্থ মন্ত্রক; ভালো ফলনের পরেও বঞ্চিত কৃষকরা

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
এক বছরে আত্মঘাতী ৪২ হাজার কৃষক ও মজুর, করোনা-পূর্ব পরিসংখ্যানেও স্বস্তি কই!