ভারত মহাসাগরে হদিশ মিলল পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রাণীর, চাঞ্চল্য বিজ্ঞানীমহলে

পৃথিবীতে প্রথম প্রাণের সঞ্চার হয়েছিল জলে। সমুদ্রে সাড়ে চার বিলিয়ন বছর আগে জন্ম হয়েছিল এককোষী অনুজীবের। ধীরে ধীরে জন্ম নেয় অন্যান্য উদ্ভিদ ও প্রাণীরা। কিন্তু বিজ্ঞান বলছে, সমুদ্রের জীবজগতের বিভিন্নতা এবং পরিধি স্থলভাগের থেকে অনেকগুণ বেশি বিস্তৃত। এখনো হাজার হাজার প্রজাতি, মানুষের অজানা হয়ে রয়ে গেছে। যার বেশিরভাগটাই সমুদ্রের অতলে। এমনটাই ধারণা জীববিজ্ঞানীদের।

সম্প্রতি এক দীর্ঘকায় তন্তুবৎ অজানা সামুদ্রিক জীবের সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা। অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমে একটি জাহাজে গবষণারত কিছু জীববিদের চোখে পড়ল এই অজানা প্রাণের অস্তিত্ব।

দ্য স্মিদ্‌থ ওসান ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে, সোমবার প্রকাশ করা হয় এই জীবের ভিডিও। অ্যাপোলেমিয়া নামক এই প্রাণীটি একধরণের সাইফোনোফোর। সাইফোনোফোর পর্যায়ের প্রাণীরা মূলত গভীর সমুদ্রে বসবাস করে। জেলিফিস এবং কোরালদের মতোই এরা শিকার করে ক্রাস্টাসিন, ছোট মাছ এবং অন্যান্য সিফোনোফোরদের। ভারত মহাসাগরে নিঙ্গালু গিরিখাতের কাছে গভীর সমুদ্রে গবেষণার সময় খুঁজে পাওয়া যায় এই জীবটিকে। সমুদ্রতল থেকে ৬৩০ মিটার গভীরে। অনেকটা ছায়াপথের মতো সর্পিলাকার এই প্রাণীটি পৃথিবীর দীর্ঘতম বলেই দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।

রিমোট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত একটি যন্ত্রের মাধ্যমে ছবি তোলা হয়েছে এই প্রাণীটির। তাই ছবি দেখে বিজ্ঞানীরা অনুমান করতে পারলেও, সঠিক দৈর্ঘ্য বলতে পারেননি এখনও। ইনস্টিটিউটের তরফে জানানো হয়, সবথেকে বাইরের বলয়ের ব্যাস প্রায় ১৫ মিটার। অর্থাৎ, ৪৯ ফুটের কাছাকাছি। পুরো প্রাণীটির দৈর্ঘ্য আনুমানিক ১৪৯ ফুট।

প্রাণীটির দেহ থেকে একধরণের মৃদু আলোকবিচ্ছুরণ লক্ষ করেছেন বিজ্ঞানীরা। তবে এই বিচ্ছুরণ, রিমোট নিয়ন্ত্রিত ওই যন্ত্রটি থেকে নির্গত আলোর প্রতিফলনের জন্যেও হতে পারে। এই বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি জীববিদরা। তবে বলাই বাহুল্য, ভিডিও প্রকাশের পরই নেট দুনিয়ায় রীতিমতো সাড়া পড়ে গেছে, সদ্য আবিষ্কৃত এই প্রাণীটিকে নিয়ে।