ট্রাক্টর দিয়ে ছবি আঁকলেন মাঠে, স্বাস্থ্যকর্মীদের শ্রদ্ধা জানাতে কীর্তি কৃষকের

চারিদিকে ফসলের মাঠ। বসন্তের শেষে বীজ বোনাও প্রায় শেষ। তার মধ্যেই দেখা যাচ্ছে একটি মাঠের মধ্যে শস্যের কোনো চিহ্ন নেই। শুধু বিরাট প্রশস্ত মাটির উপর একটি লোগো, ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিসের। আর তার নিচে লেখা 'স্টে সেফ'। ব্রিটেনের চিকিৎসকদের এই সংস্থাটির প্রতি এভাবেই নিজের শ্রদ্ধা প্রকাশ করলেন এক কৃষক। করোনা মহামারী ও আতঙ্কের পরিস্থিতিতে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন অনেকেই। তার মধ্যে এই অভিনব উদ্যোগ অনেকের নজর কেড়েছে।

৩৩ বছরের জ্যাক প্যান্টল একজন সাধারণ কৃষক। চাষের মাঠ থেকেই তাঁর উপার্জন। এদিকে তাঁর দাদার শরীরে থাবা বসিয়েছে করোনা ভাইরাস। তার মধ্যেই জ্যাক দেখছেন, এনএইচএসের কর্মী তাঁর বৌদি কীভাবে সমস্ত বিপদ অগ্রাহ্য করে ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। এই যুদ্ধ তো আসলে সবারই। তিনি নিজেই বা দূরে সরে থাকেন কী করে! অতএব বেছে নিলেন এই অভিনব পদ্ধতি।

হারফোর্ডশেয়ারে তাঁর চাষের মাঠে জ্যাক এঁকে ফেললেন এনএইচএসের লোগো। লম্বায় সেটি ৬০ মিটার আর চওড়ায় ১৫২ মিটার। এই বিরাট আয়তনের কাজটি যথাযথভাবে সম্পন্ন করা খুব সহজ বিষয় ছিল না। জ্যাক এই কাজটির জন্য তাঁর এরিয়াল ড্রোন ক্যামেরার সাহায্য নিয়েছেন। মোবাইল স্ক্রিনে সেই ক্যামেরার নির্দেশ দেখে দেখে ট্রাক্টর চালিয়েছেন মাঠের উপর দিয়ে। তবে সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একবার চার্জ দিলে মাত্র ২০ মিনিট চলে তাঁর ড্রোন ক্যামেরা। এর মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। জ্যাক অবশ্য ১৬ মিনিটের মধ্যেই কাজ শেষ করেছেন।

ইংল্যান্ডের এই মাঠে গেলে এখন মনে হবে, সারা মাঠ জুড়ে যেন এক রামধনু শুয়ে আছে। আর তাতে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে চিকিৎসক, নার্স আর স্বাস্থ্যকর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রম। অনেকেই তাঁদের সম্মান জানাচ্ছেন নিজেদের মতো করে। তার মধ্যেই জ্যাক প্যান্টলের এই উদ্যোগ। মানুষের জন্য যাঁরা পদে পদে বিপদের মধ্যে কাজ করে যাচ্ছেন, এটুকু ভালোবাসা তো তাঁদের প্রাপ্য।