ডিএনএ দিয়ে তৈরি বিশ্বের ক্ষুদ্রতম অ্যান্টেনা

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমাগত আণবিক গঠন বদলাতে থাকে প্রোটিন। বিভিন্ন ভাইরাস তো বটেই, মানবদেহেও লক্ষ করা যায় এই ঘটনা। প্রোটিনের এই কাঠামোগত পরিবর্তন নিরীক্ষণ করতে এবার নয়া পথের হদিশ দিলেন গবেষকরা। মানব জিনের মাধ্যমেই বানিয়ে ফেললেন বিশ্বের সবথেকে ক্ষুদ্রতম অ্যান্টেনা (Tiniest Antenna)। বায়ো-ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ন্যানোটেকনোলজির (Nanotechnology) এই মিশেলই এবার জানান দেবে প্রোটিন এবং অন্যান্য জৈব অণুর অবস্থান ও চরিত্রগত পরিবর্তনের তথ্য।

আজ থেকে প্রায় ৪০ বছর আগের কথা। জেনেটিক তথ্য এনকোড করে প্রথমবার ডিএনএ সিস্থেসাইজার তৈরি করেছিলেন গবেষকরা। তারপর ক্রমশ এগিয়েছে প্রযুক্তি। ডিএনএ-র তথ্য সংগ্রহ করার ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে সাম্প্রতিক সময়ে গবেষকরা তৈরি করেছেন একাধিক ন্যানোস্ট্রাকচার এবং ন্যান্যমেশিন। তারই নবতম সংযোজন এই ন্যানো-অ্যান্টেনা। 

মন্ট্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তৈরি এই অ্যান্টেনার দৈর্ঘ্য মানুষের চুলের ব্যাসের থেকেও ২০ হাজার গুণ ছোটো। যা কাজ করে অনেকটা দ্বিমুখী রেডিওর মতোই। রেডিও তরঙ্গ গ্রহণ এবং প্রেরণ করতে সক্ষম হওয়ায় সহজেই মানবদেহের বাইরে থেকে তার নিয়ন্ত্রণ করা যায় এই আণবিক যন্ত্রকে। পাশাপাশি একটি বিশেষ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোকে গ্রহণ করতেও সক্ষম এই অ্যান্টেনা। প্রোটিনের ওপর উপস্থাপনের পর অ্যান্টেনা থেকে প্রেরিত হয় ভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্য অর্থাৎ, অন্য রঙের আলো। গোটা বিষয়টাই ধরা পড়ে স্পেকট্রোফ্লুরোমিটারের ডিজিটাল স্ক্রিনে। ফলে সহজেই প্রোটিনের অবস্থান এবং তার পরিকাঠামোগত বদল বুঝতে পারেন গবেষকরা। 

সম্প্রতি, বিশ্বের অন্যতম বিজ্ঞান পত্রিকা ‘নেচার মেথডস’-এ প্রকাশিত হয়েছে সংশ্লিষ্ট গবেষণাপত্রটি। ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষানিরীক্ষায় সাফল্য মিলেছিল আগেই। এবার স্বীকৃতি পাওয়ার পর এই প্রযুক্তিকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের তোড়জোড় শুরু করেছেন গবেষকরা। মন্ট্রিলেই তৈরি হতে চলেছে এই ন্যানোঅ্যান্টেনা তৈরির স্টার্ট আপ। ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্প এবং চিকিৎসার দুনিয়ায় এই প্রযুক্তি বিপ্লব আনবে বলেই বিশ্বাস গবেষকদের। আগামীদিনে বিভিন্ন কৃত্রিম উৎসেচক, ওষুধ এবং বিভিন্ন জৈব-যন্ত্রের কার্যকারিতাকে আরও অনেকটা বাড়িয়ে দেবে এই বিশেষ ন্যানো–অ্যান্টেনার সংযুক্তিকরণ…

আরও পড়ুন
বায়ুদূষণ প্রতিকারে পথ দেখাচ্ছেন মুম্বাইয়ের স্কুলছুট প্রযুক্তিবিদ

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
চের্নোবিলকে বিষমুক্ত করবে প্রযুক্তি, পথ দেখালেন সুইস বিজ্ঞানীরা