অন্তঃসত্ত্বা সাফুরা জারগার-কে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দিল্লি হাইকোর্টের

অবশেষে জামিনে মুক্তি পেলেন সফুরা জারগার। চারমাসের অন্তঃসত্ত্বা সফুরার জামিনের বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার অনুরোধ করেছিলেন মানবাধিকার কর্মীদের অনেকেই। অবশেষে সেই আবেদনে সারা দিল দিল্লি হাইকোর্ট। ২৩ জুন বিচারপতি রাজীব শাকধের সফুরাকে জামিনে মুক্তির নির্দেশ দেন। ১০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ড এবং দুটি শর্তের সাপেক্ষে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। প্রথমত, যে কাজের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে তেমন কোনো কাজের সঙ্গে তিনি যুক্ত থাকবেন না। এবং দ্বিতীয়ত, কোনোভাবেই তদন্ত প্রক্রিয়ায় কোনরকম প্রভাব খাটানো বা হস্তক্ষেপ করা যাবে না। পাশাপাশি তদন্ত চলাকালীন তাঁকে শহর ছেড়ে না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার বিষয়টিও বলা হয়েছে জোর দিয়ে।

জামিয়া-মিলিয়া ইউনিভার্সিটির গবেষক সফুরা দিল্লির সিএএ বিরোধী আন্দোলনের একজন উল্লেখযোগ্য মুখ। তাঁর নেতৃত্বেই মূলত গড়ে উঠেছে জামিয়া-মিলিয়া কোঅর্ডিনেশন কমিটি। এর মধ্যেই ফেব্রুয়ারি মাসে আন্দোলনকে ঘিরে হিংসার বাতাবরণ তৈরি হয় দিল্লি শহরে। সেই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগেই ১০ এপ্রিল সফুরাকে গ্রেপ্তার করে দিল্লি পুলিশ। বিচারাধীন অবস্থায় তাঁকে বন্দি রাখা হয় তিহার জেলে। অন্তঃসত্ত্বা সফুরাকে গ্রেপ্তার করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন মানবাধিকার কর্মী সহ অনেক সাধারণ মানুষ। কিন্তু তিনবার তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত।

সোমবার, ২২ জুন চতুর্থবারের জন্য সফুরার আইনজীবী জামিনের জন্য আবেদন করেন। ইউএপিএ আইনে বন্দি সফুরাকে মানবিক দৃষ্টিতেই জামিন দেওয়ার আবেদন করেছিলেন তিনি। অবশ্য পুলিশের বক্তব্য ছিল, একজন অন্তঃসত্ত্বা বলেই তাঁকে জামিন দিতে হবে, এই বক্তব্য ভিত্তিহীন। সেইসঙ্গে তথ্য দিয়ে দেখিয়েছিলেন গত ১০ বছরে তিহার জেলে ৩৯ জন মহিলা সন্তান প্রসব করেছেন। যদিও পুলিশের এই বক্তব্য শেষ পর্যন্ত ধোপে টেকেনি। সফুরার মুক্তির রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকেই। আবার আদালতের আরোপিত শর্ত যেন বিচারের আগেই তাঁকে দোষী বলে সাব্যস্ত করে ফেলেছে, এমনটাও মনে করছেন অনেকে।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
অন্তঃসত্ত্বা হয়েও কারাবন্দি সফুরা, খারিজ জামিনের আবেদন, ‘গণতন্ত্র’ কি এমনই?