শিশুদের জন্য রেডিও জেইউ-র নতুন অনুষ্ঠান ‘শিশুতরঙ্গ’, সঙ্গী ইউনিসেফও

“লকডাউনের সময় আমাদের উদ্দেশ্য ছিল একদিকে গৃহবন্দি শিশুদের কাছে পৌঁছে যাওয়া, আর অন্যদিকে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। সারা রাজ্যে নানা প্রান্তে কমিউনিটি কিচেনগুলোর জন্য অর্থ সংগ্রহ থেকে শুরু করে সুন্দরবনে আমফান বিপর্যস্ত অঞ্চলে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া, পুরো কাজটাই আমরা বেশ সফলভাবে করতে পেরেছি।” বলছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তথা রেডিও জেইউ-র আহ্বায়ক ইমন কল্যাণ লাহিড়ি। এই লকডাউনের সময় বিনোদনের নানা মাধ্যমের মধ্যে বিশেষভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে রেডিও। আর যাদবপুর ইউনিভার্সিটির নিজস্ব কমিউনিটি চ্যানেলও বেশ বড়ো পরিসরে কাজ শুরু করেছে এই সময়েই।

পথচলা শুরু হয়েছিল ২০০৮ সালে। পূর্ব ভারতে তখন এটিই ছিল একমাত্র কমিউনিটি রেডিও চ্যানেল। “তবে লকডাউনের সময় আমরা আমাদের কাজকে অনেক বেশি নির্দিষ্ট এবং দৃঢ় করতে পেরেছি।” বলছিলেন ইমন কল্যাণ লাহিড়ি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং প্রাক্তনীদের এই মিলিত উদ্যোগে সাড়াও দিয়েছে মানুষ। আর এর মধ্যেই শুরু হয়েছে একটি অভিনব অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানের নাম ‘শিশুতরঙ্গ’। নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে, এর লক্ষ সমাজের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। তাদের কাছে শিক্ষার প্রকৃত মূল্যকে পৌঁছে দিতেই এই উদ্যোগ। রাজ্যের শিশুকল্যাণ দপ্তরের পাশাপাশি এই অনুষ্ঠানে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ইউনিসেফও। আর এখন পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হলেও জানুয়ারি মাস থেকে নিয়মিত অনুষ্ঠান শুরু করবে ‘শিশুতরঙ্গ’।

ঠিক কী ধরনের অনুষ্ঠান থাকছে এখানে? ইতিমধ্যে একদিন তিতি চট্টোপাধ্যায় এসে শুনিয়ে গিয়েছেন বাবা শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের জীবনের কথা। অংশুমান রায়ের ছেলে শুনিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ এবং তাঁর বাবার স্মৃতি। আবার গায়িকা লগ্নজিতা শুনিয়েছেন তাঁর ছেলেবেলার গল্প। জীবন এবং স্বপ্নের দ্বন্দ্বের গল্প। ইমন কল্যাণ লাহিড়ি জানাচ্ছেন, “তবে এই একটি অনুষ্ঠান শুধু রেডিওতে নয়, তার বাইরেও ভিডিও প্ল্যাটফর্মে করার চেষ্টা করছি আমরা। এর জন্য নিজস্ব ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলকে ব্যবহার করছি। ফলে শারীরিক প্রতিবন্ধকতাযুক্ত শিশুদের কাছে যেমন পৌঁছনো যাচ্ছে, তেমনই বাকিদের কাছেও আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠছে অনুষ্ঠান।” এখন অবশ্য নানা ছোট ছোট কমিউনিটি রেডিও উদ্যোগ দেখা যায়। কিন্তু ১২ বছরের যাত্রাপথে নিজেকে বারবার আলাদা প্রমাণ করেছে রেডিও জেইউ। আর এই নতুন উদ্যোগও যে সমানভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠবে, সে ব্যাপারে আশাবাদী প্রত্যেকেই।

Powered by Froala Editor