সৌরজগতের দূরতম সদস্য প্লুটোও উষ্ণ অবস্থায় ছিল দীর্ঘদিন, বলছে গবেষণা

আজও সৌরজগতের গ্রহের সংখ্যা জিজ্ঞেস করলেই ভুল হয়ে যায়। একেবারে দূরে বসে আছে ওই যে প্লুটো, সে গ্রহ নয়। বিজ্ঞানের ভাষায় তাকে বলে বামন গ্রহ। আকারে যেমন ছোটো, তেমনই শীতল তার শরীর। ভূপৃষ্ঠের উপর তার উষ্ণতা মোটামুটি বরফের গলনাঙ্কের থেকে ২৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড কম। কিন্তু সৃষ্টির শুরুতে তার চেহারা আদৌ এরকম ছিল না। বরং তার উষ্ণ শরীরের উপর জন্ম নিয়েছিল আস্ত একটি সমুদ্র। ঠিক পৃথিবীর মতোই জলে ঢাকা ছিল প্লুটো। আজও সেই জল বরফ হয়ে জমে আছে প্লুটোর বুকে। সাম্প্রতিক গবেষণায় এমনটাই দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা।

ঘটনাটি ঘটেছিল আজ থেকে ৪.৫ বিলিয়ন বছর আগে। সৌরজগতের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গেই জন্ম নিল প্লুটো। সূর্য থেকে বিচ্ছিন্ন একটা টুকরো থেকে ধীরে ধীরে জন্ম নিল আরও নানা ধরনের উপাদান। একেকটি যৌগ যখন জন্ম নিল, প্রতিবার বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল প্লুটোর শরীর। আর এর মধ্যেই জন্ম নিয়েছে জল। ২০১৫ সালে নাসার স্যাটেলাইট ধরা পড়া কিছু ছবি বিশ্লেষণ করে এই সিদ্ধান্তেই এসেছেন সন্ত ক্রুজ তারামণ্ডলের বিজ্ঞানী কারভার বিয়ারসন। সম্প্রতি এই বিষয়ে নেচার জিওসায়েন্স পত্রিকায় একটি গবেষণাপত্রও লিখেছেন তিনি।

সূর্য থেকে পৃথিবীর যা দূরত্ব, প্লুটো আছে আরও ৪০ গুণ দূরে। স্বাভাবিকভাবেই তার সম্বন্ধে অনেক কিছুই জানা এখনও বাকি। সেইসঙ্গে প্লুটোয় জলের উপস্থিতি আরও একটি প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। তাহলে কি ক্রুজার রেখার কাছে এই ছোট্ট জগতে একসময় প্রাণের অস্তিত্বও ছিল? এবিষয়ে অবশ্য স্পষ্ট কোনো উত্তর দিতে নারাজ বিয়ারসন। তিনি বলছেন, আমাদের আরও ভালোভাবে বুঝতে হবে কীভাবে প্রাণের সৃষ্টি ঘটেছে এবং কী কী ভাবে প্রাণের সৃষ্টি ঘটতে পারে। এবিষয়ে যথেষ্ট গবেষণা না করে কোনো সিদ্ধান্তেই আসা সম্ভব নয়।

Powered by Froala Editor