প্লাস্টিক মানবসভ্যতার এক আত্মঘাতী আবিষ্কার। বেশিরভাগ প্লাস্টিক একবার ব্যবহার করে ফেললে আর তাকে ডিকম্পোজ করা যায় না। অনেক প্লাস্টিক তো আবার পুনর্ব্যবহারযোগ্যও নয়। পরিবেশের ভয়ঙ্কর বিপদ ডেকে আনে এইসব প্লাস্টিক। তবে প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে লড়াইতে আমাদের বন্ধু হতে পারে প্রকৃতির মধ্যে থাকা ছোট্ট একটি প্রাণী। একধরনের শুঁয়োপোকা। সাধারণত লার্ভা অবস্থায় মৌচাকের মধ্যে থাকে এই পোকা। মৌচাকে জমা মোম খেয়ে বেঁচে থাকে এরা। তবে মোমের মতো প্লাস্টিক খেয়েও হজম করে ফেলে এরা। ‘প্রসিডিংস অফ রয়্যাল সোসাইটি’র সাম্প্রতিক গবেষণাপত্রে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানাচ্ছেন ব্র্যান্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্রিস্টোফার লি-ময়েন।
আরও পড়ুন
পতঙ্গ শ্রেণী থেকে স্তন্যপায়ী, সমাজ চালাতে অনেক প্রাণীই বেছে নিয়েছে ভোটদানের পদ্ধতি
পলিথিন ডিকম্পোজ করতে পারে এরকম বিভিন্ন প্রাণীর হদিশ বিজ্ঞানীরা আগেই পেয়েছিলেন। কিন্তু এই বিশেষ ধরনের শুঁয়োপোকা হজম করে ফেলতে পারে প্রায় যেকোনো ধরনের প্লাস্টিক। এমনকি এদের খাদ্যনালীতে যে গাট ব্যাক্টেরিয়া থাকে, তারাও প্লাস্টিক হজম করতে পারে। আর দুই প্রজাতি একসঙ্গে থাকলে তো কথাই নেই। নন-বায়োডিগ্রেডেবল প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে এমন ছোট্ট বন্ধুর হদিশে তাই স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত বিজ্ঞানীরা। পাশাপাশি খুঁজে দেখার চেষ্টা করছেন কোন উৎসেচকের প্রভাবে এমন বিরল বিক্রিয়া ঘটাতে পারে এই পোকা। কৃত্রিমভাবে কি সেই উৎসেচক তৈরি করা সম্ভব?
আরও পড়ুন
বাঁচার জন্য প্রয়োজন নেই অক্সিজেনের, বিরল প্রাণীর সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা
আমাদের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গিয়েছে প্লাস্টিক। তাই হাজার বিপদের কথা মাথায় রেখেও প্লাস্টিককে না বলতে পারছি না। এবার কি প্লাস্টিক দূষণের প্রভাব থেকে রেহাই পেতে চলেছি আমরা? এখনই এই বিষয়ে আশার কথা শোনাতে নারাজ বিজ্ঞানীরা। শুঁয়োপোকার শরীরে যে ডিগ্রেডেশন সিস্টেম আছে, সেটা আরও খতিয়ে দেখে তবেই একটি পূর্ণাঙ্গ প্রযুক্তি প্রস্তুত করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন লি-ময়েন। আপাতত গবেষণার দিকেই চোখ রাখি আমরা।