কখনও স্ত্রী-র ভয়, কখনও আবার স্বার্থসিদ্ধি; নিজেই নিজেকে অপহরণ করেছেন যে সব ব্যক্তি

/১১

আত্মহত্যা থেকে শুরু করে খুন-রাহাজানি— চাপের মুখে নিজেকে বাঁচাতে সব কিছুই করতে পারে মানুষ। এমনকি নিজেকে অপহরণও। হ্যাঁ, এমন অবাক করা বিরল ঘটনারও সাক্ষী রয়েছে ইতিহাস। সংখ্যাটা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে সারা পৃথিবীতে প্রকাশ্যে এসেছে এমন দশটি ঘটনা। যেখানে অদ্ভুত পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে কোনো ব্যক্তি অভিনয় করেছেন আত্ম-অপহরণের...

/১১

রবার্ট ব্র্যান্ডেল— হেরে গিয়েছিলেন একটি সুপার বোল বাজি। আর তাতেই তাঁকে দিতে হত ৫০ হাজার ডলার। দেনা এড়াতে নিজের হাতই টেপ দিয়ে পিছ-মোড়া করে বেঁধে বন্দি হন গাড়ির ব্যাকসিটে। অভিযোগ করেন দস্যুরা তাঁকে বন্দুক দেখিয়েই লোপাট করেছে অর্থ। এমনটা মেনেও নিয়েছিল পুলিশ। তবে মিথ্যে সাজানোয় সামান্য ফাঁক থেকেই পরে ধরা পড়ে যান ব্র্যান্ডেল।

/১১

আলেকজান্দ্রো মারিও কর্টেজ— এই মেক্সিকান অধিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন একজন শরণার্থী হিসাবেই। তবে ফিরে যেতে চেয়ে দীর্ঘদিন ধরেও আবেদন করে মিলছিল না ভিসা। ফলত বেছে নিয়েছিলেন আত্ম-অপহরণের পথ। কর্টেজ মিনেসোটায় এক নির্জন গির্জায় গিয়ে সহকারীর সাহায্যে বন্দি করেন নিজেকে। উদ্দেশ্য ছিল ক্রাইম-সিনের সাহায্য নিয়ে ভিসা আদায়।

/১১

রাফায়েল হুগো (কাল্পনিক)— ডেনটিস্ট মানেই যে আতঙ্ক। আর যেতে হবে তাঁরই কাছে। বাবা-মার কাছে কোনো অজুহাত না টিকতে নিজেই বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় ফ্রান্সের বছর ১২-র কিশোর। সেন্ট জার্ভিস গ্রামে বেশ কয়েকদিন লুকিয়ে থাকার পর, পুলিশের কাছে ধরা পড়ে সে জানিয়েছিল তাঁকে অপহরণ করেছিল দুষ্কৃতীরা। তবে প্রশ্নের চাপে শেষ অবধি সত্যি কথাই বেরিয়ে আসে মুখ থেকে। তবে কিশোরের এই কাণ্ডে ঘটনা প্রকাশ করলেও তার নাম প্রকাশ করেনি ফ্রেঞ্চ প্রশাসন।

/১১

হুয়ান রাতি (কাল্পনিক)— স্পেনের এই ড্রাইভার জড়িয়ে পড়েছিলেন মাদক ও মধুচক্রে। এক সংস্থার সঙ্গেই তাঁর চুক্তি হয়েছিল পরিষেবা দেওয়ার। তবে সব টাকা খুইয়ে নিঃস্ব হয়ে গিয়েছিলেন হুয়ান। নিখোঁজ তহবিল আড়াল করতে নিজেই নিজেকে গাড়িতে বন্দি করে দাবি করেন দুষ্কৃতীরা অপহরণ করে তাঁকে। তবে পুলিশের জেরায় শেষরক্ষা হয়নি। করতে হয়েছিল হাজতবাসও। তবে প্রকাশ্যে আসেনি তাঁর নাম।

/১১

মারিয়া গঞ্জালেজ— ক্যালিফোর্নিয়ার এই পরিবাহী ট্রাকের মালকিনকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল এক পরিত্যক্ত বাড়িতে বন্দি ও আহত অবস্থায়। তিনি দাবি করেছিলেন দু’জন মুখোশ পরিহিত ব্যক্তি তাঁকে অপহরণ ও শারীরিক নির্যাতন করে। সঙ্গে লুঠ করে নেয় অর্থও। পরে তদন্তে উঠে আসে কর্মচারীদের বকেয়া ৯০০০ ডলার বেতন না দেওয়ার জন্যই এই পথ নিয়েছিলেন মারিয়া।

/১১

জেসিকা নর্ডকুইস্ট— কথায় রয়েছে যুদ্ধ এবং প্রেমে সবই নৈতিক। লন্ডনের এই যুবতীও প্রাক্তন প্রেমিককে ফিরিয়ে আনতেই বেছে নিয়েছিলেন আত্ম-অপহরণের পন্থা। টাইপ করা চিঠি পৌঁছেছিল প্রাক্তনের কাছে। বলে হয়েছিল জেসিকাকে অপহরণ করে ধর্ষণ করা হয়েছে এবং পুলিশ তাঁর জন্য শুরু করেছে খানা-তল্লাসি। তবে নিজের বাড়িতেই শেষ অবধি সুস্থ-স্বাভাবিক অবস্থাতেই খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল তাঁকে।

/১১

রামেল পেটওয়ে— পেশা চুরি, ডাকাতি, গুন্ডাবৃত্তি, অনৈতিক ব্যবসা। গ্রেপ্তার হয়েছেন ১৫ বার। শুধরাতে পারেনি পুলিশ। তবে নিউ-ইয়র্কের এই দুঁদে মস্তানের কাছে সাক্ষাৎ যম ছিলেন তাঁর স্ত্রী। স্ত্রীকে লুকিয়ে আবারও পা দিয়েছিলেন অন্ধকার জগতে। তবে ঝামেলায় ফেঁসে ফিরতে লেগেছিল ১৪ দিন। স্ত্রীয়ের কাছে জবাব দিতে না পারার কারণে নিজেকে অপহরণ করেন। পিছমোড়া করে বাঁধা অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ। তবে নিজে নিজের হাত বাঁধতে গিয়ে কব্জি থেকে ঝুলে ছিল টেপের রোল। পুলিশের মার খেয়ে এই ব্যক্তি স্বীকার করেন নিজের অপরাধের কথা।

/১১

জোয়ান্না গ্রেনসাইড— বুলিমিয়া রোগে আক্রান্ত ছিলেন এই মার্কিন যুবতী। অর্থাৎ, মশলা-সমৃদ্ধ কিছু খাবার খেলেই বমি হয়ে যায় তাঁর। অফিসের কলিগদের কাছে একেবারেই প্রকাশ্যে আনতে চাইতেন না এই ঘটনাটাই। ফলে বড়োদিনের পার্টির ঠিক আগেই নিজেকে এয়ারপোর্টে লুকিয়ে ফেলেন জোয়ান্না। অন্তর্ধানে ছিলেন ৩৬ ঘণ্টা। তারপর ফিরে এসে সহকর্মীদের কাছে দাবি করেছিলেন তাঁকে অপহরণ করা হয়েছিল। তাঁরাই চিন্তিত হয়ে পুলিশকে জানালে, সামনে আসে গোটা ঘটনাটা।

১০/১১

অ্যারিনা শেলবি (কাল্পনিক)— ওহিও ছোট্ট স্কুলপড়ুয়া। তবে একদমই স্কুলে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল না। তাই স্কুল বাসে না উঠে সোজা হাজির হয়েছিল পুলিশের কাছে। দাবি করে তাঁকে অপহরণের চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু পালিয়ে চলে এসেছে সে। পরদিন থেকে বন্দুক হাতেই বাস স্টপে হাজির হত তার বাবা-মা। তবে তার দেওয়া বর্ণনা-মাফিক কালো গাড়ি কখনোই দেখতে পাননি তাঁরা। সতর্ক থেকে পুলিশও হদিশ পায়নি কোনো। শেষে মায়ের সামনে পুলিশের জেরায় বানানো মিথ্যের কথা স্বীকার করে সে।

১১/১১

সাব্রিনা বেলচার— ২০২০-রই ঘটনা। মেয়র পদের নির্বাচনে দাঁড়ানো এই ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ভাড়া করেছিলেন অপহরণকারীকে। তারপর অপহরণ, লাঞ্ছনা এবং নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার করেন এই ভদ্রমহিলা। উদ্দেশ্য ছিল প্রতিপক্ষের ভাবমূর্তি নষ্ট করা। সাব্রিনা পুলিশের কাছে তদন্তের আবেদন করেন নিজেই। আর তারপরেই প্রকাশ্যে আসে আসল ঘটনা।

Powered by Froala Editor

More From Author See More