অনলাইনেই মিউজিয়াম, ঐতিহাসিক সামগ্রীর সম্ভার নিয়ে নেটদুনিয়ায় যাদবপুরের ছাত্র

ঘরের কোণে কোথাও লুকিয়ে আছে ছোট্ট একটি জিনিস। হয়তো আদ্যিকালের কোনো সিগারেটের প্যাকেট। অথবা ছাতার বাঁট। সেই সবই এখন ইতিহাস। তবে ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসাবে যে তাদেরও যথেষ্ট মূল্য আছে, সেটা অনেকেই মনে রাখি না। সেইসব ইতিহাসকেই এক জায়গায় ধরে রাখতে একটি অনলাইন মিউজিয়াম তৈরি করে ফেলেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র শুভ্রদীপ চ্যাটার্জি। অবশ্য মিউজিয়াম না বলে এটাকে একটা ছোট্ট প্রকল্প বলতেই আগ্রহী শুভ্রদীপ। তাঁর কথায়, “এফিমেরা বা ক্ষণস্থায়ী নানা নমুনা নিয়ে যে যথেষ্ট গবেষণার পরিসর আছে, সেটা অনেকেই জানেন না। ফলে গবেষকদের কাছেও অনেক নমুনা পৌঁছয় না। আমি চেয়েছি মানুষ এগুলো একে অপরের সঙ্গে আদানপ্রদান করুক। তাতে গবেষণার পরিসরটা আরও বিস্তৃত হবে।”

শুভ্রদীপ জানালেন, পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল ২ বছর আগেই। তখন সদ্য যাদবপুরে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হয়েছেন তিনি। তবে পড়াশোনার চাপে তখন কিছু করে ওঠার সময় পাননি। এখন ডিগ্রি কোর্সের পড়াশোনা শেষ। কিন্তু গবেষণার কাজে ঢুকতেও কিছুটা দেরি আছে। ফলে এই সময়টাই কাজে লাগিয়ে নিয়েছেন তিনি। “প্রথমে অবশ্য ভেবেছিলাম নানা ধরনের প্রত্নসামগ্রী নিয়ে একটা অনলাইন মিউজিয়াম তৈরি করব। কিন্তু তার জন্য অনেক বড়ো পরিকল্পনা দরকার। তারপর ভাবলাম, যদি শুধু এফিমেরা নিয়ে কাজ করি তাহলে কাজের পরিসরটা ছোটো হবে এবং অনেক বেশি নির্দিষ্ট হবে।” যদিও ভবষ্যতে এই প্রকল্পকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে বলে আশাবাদী শুভ্রদীপ।

পাশাপাশি তাঁর এই প্রকল্পের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হল শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জুড়ে নেওয়ার পরিকল্পনা। বিশেষ করে যাঁরা চোখে দেখতে পান না, তাঁদের পক্ষে এইধরনের বিষয় নিয়ে গবেষণার সুযোগ থাকে না বললেই চলে। শুভ্রদীপের কথায়, “যাদবপুরে আমাদের একটি বিশেষ কোর্স ছিল প্রতিবন্ধকতার উপর। সেই বিষয়ে পড়াশোনা করতে গিয়েই মনে হয়, এরকম একটা বিষয়ে সবাইকে জুড়ে নেওয়া যাবে না কেন? আমি তাই প্রতিটা নমুনার সঙ্গে বিশদ বিবরণ দিয়ে দিয়েছি, যাতে নমুনাটির ছবি দেখতে অসুবিধা হলেও বর্ণনা পড়ে সেটা সম্বন্ধে ধারণা করা যায়।” প্রথম প্রথম নিজের বাড়ির কিছু ছোট ছোট জিনিস নিয়েই শুরু হয়েছিল পথচলা। এর মধ্যে ছিল একটি চিনা ছাতার লেভেল, লন্ডনে তৈরি একটি আদ্যকালের শৌখিন কাগজের নমুনা। তবে ধীরে ধীরে আরও অনেকেই এগিয়ে আসছেন। একটু একটু করে বিস্তৃতি পাচ্ছে শুভ্রদীপের প্রকল্প ‘দি এফিমেরিয়াড প্রোজেক্ট’।

Powered by Froala Editor

More From Author See More