হ্যারি পটার উপন্যাসের রহস্যময় সাপ খুঁজে পাওয়া গেল অরুণাচলের জঙ্গলে

অরুণাচল প্রদেশের জঙ্গলে খুঁজে পাওয়া গেল একটি বিষধর সাপের প্রজাতি। চেহারা দেখে মনে হয়, যেন জে কে রাওলিং-এর বিখ্যাত হ্যারি পটার উপন্যাসের পাতা থেকে উঠে এসেছে এই সাপ। হগওয়ার্ডের প্রফেসর সালাজারের সেই সবুজ রঙের বিষধর সাপটির কথা মনে আছে নিশ্চই। ঠিক তেমন একটি সাপ খুঁজে পাওয়া গেল অরুণাচল প্রদেশের জঙ্গলে। বিজ্ঞানীরা তাই এই প্রজাতিটির নাম রেখেছেন সালাজার পিট ভাইপার। বিজ্ঞানের ভাষায় পুরো নাম, ট্রিমেরিসোরাস সলাজার।

বিগত বছর খানেকের মধ্যে পাঁচটি নতুন প্রজাতির সরীসৃপের সন্ধান পাওয়া গেল অরুণাচল প্রদেশের জঙ্গলে। তার মধ্যে আছে দুটি কচ্ছপের প্রজাতি এবং তিনটি সাপের প্রজাতি। এর মধ্যে সর্বশেষ এবং অবশ্যই সবচেয়ে আকর্ষণীয় আবিষ্কার সালাজার পিট ভাইপার। ভাইপার গোত্রের সাপেদের বিষ যেমন ভয়ঙ্কর, তেমনই উত্তাপ বোঝার ক্ষমতাও নিখুঁত। মানুষের উষ্ণ রক্তের চলাচল দেখলেই ছোবল বসায় সেখানে। এই প্রজাতিটিও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে তার চেহারার অসাধারণ সৌন্দর্যের দিকে তাকালে মুগ্ধ হতেই হবে। কচি পাতার মতো সবুজ শরীরে সামান্য লালের ছোঁয়া। তবে একই প্রজাতির অন্য প্রাণীদের চেহারা কিছুটা আলাদা হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

গতবছর ন্যাশনাল সেন্টার অফ বায়োলজিক্যাল সায়েন্স, বেঙ্গালুরু এবং বোম্বে ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটির একদল বিশেষজ্ঞ অরুণাচল প্রদেশ থেকে কিছু অজ্ঞাত প্রাণীর নমুনা সংগ্রহ করে আনেন। তার মধ্যেই পাওয়া যায় এই পিট ভাইপার সাপটি। সংগ্রহ করেছিলেন আয়াজ মির্জা এবং হার্সাল ভোঁসলে। অবশেষে গবেষণা করে দেখা যায়, প্রাণীটি সম্পূর্ণ পৃথক প্রজাতির। জু-সিস্টেম্যাটিক অ্যান্ড ইভোলিউশন পত্রিকায় গবেষণা সংক্রান্ত বিশদ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে এই সপ্তাহেই। আর স্বাভাবিকভাবেই নতুন এই প্রজাতির সাপটিকে ঘিরে উৎসাহ তৈরি হয়েছে মানুষের মনে। বিশেষ করে, উপন্যাসের পাতা থেকে উঠে আসা একটি প্রাণী। মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এটুকুই যথেষ্ট।

তবে এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল, প্রকৃতির মধ্যে এমন অনেক প্রাণীই আছে যাদের অস্তিত্বের কথা আমরা একেবারেই জানি না। বছর খানেকের মধ্যে একটি রাজ্য থেকেই পাওয়া গেল এমন পাঁচটি সরীসৃপ। এই ঘটনাই বিশেষজ্ঞদের অবাক করছে। পরবর্তীকালে আরও গবেষণার ফলে এমন অনেক নতুন নতুন প্রাণীই খুঁজে পাওয়া যেতে পারে। আর এই সমস্ত আবিষ্কারের ফলে পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যকে আরও ভালোভাবে বোঝা যাবে। হয়তো বিলুপ্তির হাত থেকেও বাঁচানো যাবে অনেক প্রাণীকে।