বর্ণবৈষম্যের কারণে এখনও গ্রামে ‘একঘরে’ নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী-র পরিবার!

স্বভাবসিদ্ধ অভিনয়, ব্যক্তিত্ব এবং ডায়ালগ। তাঁর সিনেমা বা সিরিজের কথা সামনে এলেই উৎসাহিত হয়ে ওঠেন দর্শকরা। তিনি নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী। আধুনিক ভারতের অভিনয় জগতের অন্যতম নক্ষত্র । কিন্তু এই তারকা অভিনেতাকেও মুখোমুখি হতে হয়েছিল বৈষম্যের। সে কথাই সম্প্রতি প্রকাশ্যে আনলেন রূপোলি পর্দার মান্টো।

সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে এসে জাতি, ধর্ম ও বর্ণবৈষম্যের কথা উঠে এল তাঁর মুখে। হাথরাস প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই তিনি জানান, এই ঘটনা অস্বীকার করার কোনো জায়গাই নেই। উত্তরপ্রদেশে দলিত তরুণীর ঘটনা যে হামেশাই হয়ে থাকে তারও ইঙ্গিত দেন তিনি। জানান প্রায়শই তা প্রকাশ্যে আসে না। এই ধরণের বৈষম্যের বিরুদ্ধে চলচ্চিত্র জগতকেও যে সম্মিলিত প্রতিবাদের পন্থাই বেছে নিতে হবে, জানান তিনি।

উত্তরপ্রদেশেরই ছোটো একটি গ্রামে বেড়ে ওঠা নাওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকীর। তবে ছোটো থেকেই তিনি দেখে এসেছেন গ্রামে প্রায় কোণঠাসা তাঁদের পরিবার। কারণটা বুঝতে পেরেছিলেন অনেক পরে। তাঁর ঠাকুমা নিম্ন বর্ণের হওয়ার কারণে গ্রাম প্রায় ‘একঘরে’ করেছিল তাঁদের পরিবারকে। আজ তাঁর এত খ্যাতি, ক্ষুরধার অভিনয়ের পরেও তাঁদের গ্রহণ করেনি গ্রামবাসীরা। উচ্চবর্ণের ‘শেখ সিদ্দিকী’দের কাছে সম্মানের থেকেও বড়ো বিচার্য বিষয় হল বর্ণ। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই যন্ত্রণার কথাই যেন ফুটে উঠল অভিনেতার কণ্ঠে।

সম্প্রতি অনলাইন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্সে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর অভিনীত চলচ্চিত্র ‘সিরিয়াস মেন’। সিনেমায় একজন দলিত ব্যক্তির ভূমিকায় অভিনয় করতে দেখা গেছে তাঁকে। তবে তা গল্প হলেও, চরিত্রের ভেতরকার যন্ত্রণাটা যেন স্বয়ং অভিনেতারই। এই বৈষম্য মানুষের মধ্যে এমনভাবে গেঁথে আছে, যে তা সহজে দূর করাই দুষ্কর বলে মনে করেন সিদ্দিকী। এর শেষ কবে তা জানা নেই কারোরই...

Powered by Froala Editor