রাজারাজড়া নয়, মিশরে আবিষ্কৃত এক সাধারণ কিশোরীর পিরামিড, সঙ্গে মমি

মিশরের পিরামিড বলতে তো আমরা জানি ফ্যারাও অথবা গণ্যমান্য কোনো ব্যক্তির সমাধি। তবে মিশরের সাধারণ মানুষের দেহ সৎকারের ব্যবস্থা ছিল স্বতন্ত্র। কিন্তু এর মধ্যেই যদি কোনো পিরামিডের ভিতরের মমিকে দেখিয়ে বলা হয়, এটা কোনো বিখ্যাত মানুষের সমাধি নয়, সামান্য একজন কিশোরীর সমাধি!

অবাক হচ্ছেন নিশ্চই। গবেষকরাও এমন পিরামিড দেখে অবাক হয়েছেন। লাক্সোর শহরের নিকটে সত্যিই এমন এক পিরামিডের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। সেখানে শায়িত আছে একটি বছর পমেরোর কিশোরী। ৫ ফুট ৭ ইঞ্চির সাদামাটা কফিনের মধ্যে প্রায় অযত্নে রক্ষিত এই মমি। পিরামিডের চেহারাও সাদামাটা। তবে বহু রাজা মহারাজার পিরামিডের চেয়ে এই সাধারণ পিরামিডটি প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছে অনেক বেশি আকর্ষণের বিষয়। রাজপরিবারের জীবনযাত্রার কথা তো অনেকটাই জানা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কেমন ছিল মিশরের সাধারণ মানুষের জীবন? সেই প্রশ্নের উত্তর হয়তো মিলবে এখানেই।

আনুমানিক ১৫৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ নাগাদ মৃত্যু হয়েছিল এই কিশোরীর। ফ্যারাওরা তখন মিশরের উত্তর দিকে রাজত্ব করেন। মিশরের দক্ষিণ দিকে তখন হিকসস উপজাতির মানুষের বাস। তবে সেই সময়েই তৈরি হয়েছিল এই পিরামিড। হয়তো ফ্যারাওদের দেখেই অনুপ্রাণিত হয়েছিল এই কিশোরী, আর তার ইচ্ছাপূরণ করেছে আত্মীয়রা। তবে পিরামিডের অবিন্যস্ত সাজসজ্জা দেখেই বোঝা যায়, পিরামিড বানাতে তাঁরা ঠিক অভ্যস্ত ছিলেন না। বিশেষ করে মমি সংরক্ষণের উন্নত প্রযুক্তি তাঁরা ভালোভাবে জানতেন না।

তবে পিরামিডের সাজসজ্জা উন্নত না হলেও তার মধ্যে যেসব জিনিসের সম্ভার আছে, তা দেখে রীতিমতো অবাক হয়েছেন গবেষকরা। প্রচুর পরিমাণে সোনার অলঙ্কার তো আছেই। সেইসঙ্গে আছে টিনের তৈরি সামগ্রীও। প্রাচীন মিশরীয়দের কাছে টিন ছিল সোনার চেয়েও মূল্যবান ধাতু। তাছাড়া আছে বহু মূল্যবান রত্ন। এছাড়া একটি চামড়ার পাদুকার কথা উল্লেখ করেছেন অনুসন্ধানকারীরা। সেইসঙ্গে অনেক খেলার সামগ্রীও গবেষকদের নজর কেড়েছে। এমন বিচিত্র পিরামিড যে মিশরের প্রাচীন ইতিহাসকে বুঝতে অনেকটাই সাহায্য করবে, সে ব্যাপারে আশাবাদী গবেষকরা।