সামরিক শাসন শুরু মায়ানমারে, গ্রেপ্তার সু কি-সহ ২৪ রাষ্ট্রনায়ক

মাত্র ১০ বছর হল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মায়ানমারে। আর এর মধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। শুধু যে রাজনৈতিক চাপান-উতোর, তাই নয়। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে উঠেছে যে, সামরিক বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন আং সান সু কি সহ ২৪ জন প্রথম সারির জাতীয় নেতা-নেত্রী। গণতান্ত্রিক সরকারের বদলে আবার শুরু সামরিক শাসন। সপ্তাহখানেক ধরে বন্ধ দেশের সমস্ত গণমাধ্যম, এমনকি ব্যাঙ্কও।

ভারতের কিছুদিন পরেই স্বাধীনতা পায় বর্মা বা মায়ানমার। সেটা ১৯৪৮ সাল। তবে রাজনৈতিক স্বাধীনতা এলেও সাধারণ মানুষের স্বাধীনতা পেতে তখনও ঢের দেরি। আর তার কারণ স্বাধীনতার ঠিক আগেই শুরু হয়ে গিয়েছিল অন্তর্দ্বন্দ্ব। সংগ্রামীদের মধ্যে যাঁরা গণতন্ত্রের পক্ষে ছিলেন, তাঁদের হয় কোণঠাসা করা হল আর নাহয় গোপনে হত্যা করা হল। শুরু হল সামরিক শাসন। তবে স্বাধীনতার আকাঙ্খাকে সম্পূর্ণ মুছে ফেলা গেল না। আং সান সু কি-র নেতৃত্বে নতুন করে শুরু হল গণ-আন্দোলন। ১৯৯০ থেকে ২০১০ সাল ছিল সেই আন্দোলনের শেষ পর্যায়। একাধিকবার কারাবন্দি হয়েছেন সু কি। শেষ পর্যন্ত ২০১১ সালে সামরিক শাসনের অবসান হল। আর ২০১৫ সালে তৈরি হল প্রথম নির্বাচিত সরকার।

এতদিন গণনির্বাচনে সু কি-র ন্যাশানাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না। তবে গত নির্বাচনে সামরিক বাহিনীর মদতপুষ্ট দল ইউএসডিপি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামে। যদিও নির্বাচনের ফলাফলে ব্যাপক পরাজয় ঘটে সেই প্রতিপক্ষের। আর এর পরেই নির্বাচনের ফলাফলকে ভূয়ো বলে দাবি করে সামরিক বাহিনী। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সেই দাবি উড়িয়ে দেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত সামরিক শক্তির কাছে পরাস্ত হল গণতন্ত্র। এই ঘটনা যে শুধু রাজনৈতিক, তা নয়। মানুষের স্বাধীন চিন্তার পরিসরও সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। মায়ানমারের ইতিহাসে কি আবারও শুরু হল এক অন্ধকার যুগ?

Powered by Froala Editor

Latest News See More