খুলছে কারখানা, ট্রেনে উপচে-পড়া ভিড়; ভিন রাজ্যের পথে পরিযায়ী শ্রমিকরা

লকডাউনের সময় বেশ কিছু দৃশ্য সংবাদপত্রের পাতায় বা টিভির পর্দায় উঠে এসেছিল। রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে অনেকগুলো পরিবার। মাথায়, হাতে পোঁটলা, ব্যাগ। হাজার হাজার মানুষ হেঁটেই চলেছেন রাস্তায়। পকেটে সামর্থ্য নেই, তাও ঘরে ফিরতে হবে। এই রাস্তাই দেখেছিল অসংখ্য মৃত্যু। আধপোড়া রুটি রেখে ট্রেন লাইনেই দেহ রেখেছিলেন কয়েকজন। পরিযায়ী শ্রমিকদের এমন অবস্থা সাক্ষী থেকেছিল গোটা ভারত। আজ আবার সেই দৃশ্য ফিরে এসেছে। এবার পথে নয়, ট্রেনে… 

১ জুন থেকে লকডাউন শিথিক হবার পর একটু একটু করে অফিস, কারখানা খুলতে শুরু করেছে। চাকুরিজীবীরাও রাস্তায় বেরোতে শুরু করেছেন। আর আজকের দিনে দাঁড়ালে দেখা যাবে, অনেক জায়গাই নিজের কাজের গতি ফিরে পেয়েছে অনেকটা। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে কারখানার মালিকরা চাইছেন তাঁদের অধীনে কাজ করা দিনমজুর, পরিযায়ী শ্রমিকরা আবার ফিরে আসুক। তাঁদের আবার কাজ দেওয়া হবে। এমনকি তাঁরা ফেরার খরচটুকুও দিতে রাজি হয়ে যাচ্ছেন কিছু ক্ষেত্রে। এমন পরিস্থিতিতে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠে আসছে। কিন্তু সেইসব প্রশ্ন সরিয়ে বেঁচে থাকার কথাকেই মনে করছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। এমনিই ঘরে টাকা নেই, কাজ নেই; এই সময় যদি ভিন রাজ্যের কারখানায় ফিরে না যান তবে সেই সুযোগটুকুও চলে যাবে! 

সেই চিন্তা থেকেই পরিযায়ী শ্রমিকরা আবারও পরিবার নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন রাস্তায়। তবে এবার চিত্রটা একটু অন্য। দেশের সমস্ত প্যাসেঞ্জার, এক্সপ্রেস বা স্পেশ্যাল মেল ট্রেনের তালিকা দেখলেই ব্যাপারটা পরিষ্কার হবে। সমস্ত ট্রেনই ভর্তি হয়ে যাচ্ছে, আর সেখানে জায়গা নিয়েছেন এই পরিযায়ী শ্রমিকরা। অন্তত ৬৪টি ট্রেনের বুকিং ১০০ শতাংশ হয়ে গেছে। বাকি ট্রেনও প্রায় ভর্তি। বেশি ভাড়া দিয়েও এই শ্রমিকরা যেতে রাজি। বিপদের সময় এই কারখানার কর্তৃপক্ষরাই তাঁদের পাশে এসে দাঁড়াননি। কিন্তু পেট তো এসব মানবে না! সোশ্যাল ডিসটেনসিং, করোনা পরিস্থিতি এদের কাছে ফিকে পড়ে গেছে। এখন একটাই চিন্তা তাঁদের, রোজগার করে সংসারের বাকি মানুষদের মুখে একটু খাবার তুলে দেওয়া। যে রেললাইনে একদিন পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃতদেহ পড়েছিল, সেখান দিয়েই আবারও ছুটবে ট্রেন। 

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
লকডাউন ফুরিয়ে এল, পরিযায়ী শ্রমিকরা কি আদৌ ফিরবেন কাজে?