আত্মহত্যার থেকে বাঁচিয়েছিলেন যে নারী, তাঁকেই চিঠি লিখলেন সৈনিক

সুইসাইড। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পর, একটা মানুষের শেষ পরিণতি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই দিকেই গড়ায়। তার পাশে তখন কোনও ছায়াও থাকে না। কিন্তু যদি কেউ আসেন শেষ মুহূর্তে? পাশে এসে দাঁড়ান? এইরকমই একটি কাহিনি তুলে ধরলেন এক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি। তুলে ধরলেন নিজেরই কথা, সঙ্গে তাঁর ‘রক্ষাকর্ত্রীর’ কথা। 

আমেরিকার অ্যাড ও সোশ্যাল সাইট ক্রেগলিস্টে সম্প্রতি একটি চিঠি নজরে আসে। চিঠিটি এক ব্যক্তি লিখেছেন, নিজের পরিচয় গোপন রেখে। সেখানে উল্লেখ করেছেন নিজেকে শেষ করে দিতে যাওয়ার দিনটা। একটা সময় মার্কিন সেনাবাহিনীতে ছিলেন তিনি। সালটা ১৯৭২। সদ্য হয়ে গেছে ভিয়েতনামের যুদ্ধ। সেই যুদ্ধেই অংশ নিয়েছিলেন এই ব্যক্তি। মার্কিন যোদ্ধা হিসেবেই নিজের কাজ করেন। কিন্তু সেই ভয়াবহতা ছাপ ফেলে মনে। নিজেকেই দোষ দিতে লাগলেন তিনি। কত লোককে মেরেছেন, কত শৈশব শেষ হয়ে গেছে চোখের সামনে। এইসব থেকেই মানসিক চাপ তৈরি হয় তাঁর। যেটা একটা সময়, আত্মহত্যার দিকে চলে যায়।

’৭২-এর শেষ দিন। নিজেকে শেষ করে দিতে বদ্ধপরিকর সেই ব্যক্তি। কিন্তু কথায় বলে না, রাখে হরি তো মারে কে! যে সময় নিজেকে গুলি করতে যাবেন, তখনই দেখলেন একটি মহিলাকে। আমেরিকার ওল্ড স্টেট হাউজের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে, বৃষ্টি থামার অপেক্ষায়।

কী মনে হওয়ায় সেই ব্যক্তি চলে এলেন সে-মহিলার দিকে। বলা ভালো, দেওয়াল ফিরে পেলেন তিনি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথায় নিজেকে উজাড় করে দিলেন ব্যক্তি। মহিলাটিও শুনলেন, সবটা। ভরসা দিলেন। ব্যক্তিটি সরে এলেন খাদের ধার থেকে। না, বন্দুক থেকে কোনও গুলি চলেনি সেইদিন। বারুদের সঙ্গে যুদ্ধে সেদিন জিতে গিয়েছিল মানবতা।

তারপর, কেটে গেছে বহু বছর। সম্প্রতি সেই ঘটনাকে স্মরণ করেই ক্রেগসলিস্টে চিঠিটি প্রকাশ করেন ওই ব্যক্তি, নিজের নাম গোপন করে। ধন্যবাদ জানান ওই মহিলাকে। শুনতে পেলেন কি তিনি? জানা যায়নি সেটা।

More From Author See More