রেলে নতুন নিয়োগ আপাতত স্থগিত, সংকটে অসংখ্য চাকুরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ

করোনার বর্তমান পরিস্থিতি এবং লকডাউনের জন্য বন্ধ হয়ে আছে লোকাল ট্রেন চলাচল। বিগত কয়েক মাস থেকে থমকে আছে ভারতের অন্যতম প্রধান যোগাযোগ ব্যবস্থা। এমন পরিস্থিতিতে নতুন পদগুলিতে নিয়োগের কাজ স্থগিত রাখার নির্দেশ দিল রেল কর্তৃপক্ষ। যার জেরে সংকটে পড়ল হাজার হাজার চাকুরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ।

লোকসভা নির্বাচনের আগে বিপুল সংখ্যক শূন্যপদের ঘোষণা করেছিল ভারতীয় রেল। বিভিন্ন পদে নিয়োগের জন্য আবেদনও জমা পড়েছিল বিপুল পরিমাণে। হিসেব অনুযায়ী, প্রায় দুই কোটির ওপর মানুষ চাকরির জন্য দরখাস্ত করেছিলেন। তবে সেভাবে পরীক্ষার নোটিশ আসেনি। শেষ পর্যন্ত সেইসব বন্ধ হওয়ার মুখে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, নিরাপত্তা সংক্রান্ত পদ ছাড়া বাকি পদে নতুন করে নিয়োগ আপাতত স্থগিত রাখা হোক। শুধু তাই নয়, যে পদগুলি ফাঁকা পড়ে আছে, সেগুলো নিয়েও আলোচনায় বসতে চলেছে রেল বোর্ড। সেখানে বিবেচনা করে একটা বড়ো সংখ্যক পদ লোপ করাও হতে পারে।

কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত? রেল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, মার্চ মাস থেকে চলা কোভিড পরিস্থিতি ও লকডাউন রেলের আয়ের দিকে আঘাত করেছে। যাত্রীদের থেকে যে পরিমাণ আয় হত, সেটা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। তাই সবদিক থেকে যাতে ব্যয় কমানো যায়, সেই জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত বছরের ঘোষণা অনুযায়ী প্রায় আড়াই লাখের ওপর পদ খালি ছিল রেলে। এখন সেখানেও আঘাত পড়তে চলেছে। 

এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। নতুন পদে নিয়োগের ঘোষণা অনেক আগেই হয়ে গিয়েছিল। আর লকডাউন শুরু হয়েছে এই বছরের মার্চে। তাহলে এতদিন কী করছিল রেল? দুই কোটির ওপর মানুষ আশায় বসেছিলেন। অনেক কষ্ট করে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, স্বপ্ন দেখছিলেন। এক ধাক্কায় সেসব ভেঙে গেল। তার দায় কে নেবে? এমনিতেই দেশে চাকরির পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটজনক। তার ওপর করোনা পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর রূপ দেখিয়ে দিয়েছে। রেল বোর্ডের এই সিদ্ধান্তের প্রভাব কি এখানে পড়বে না? বিশেষজ্ঞ থেকে সাধারণ মানুষ— সবাই এমন প্রশ্ন তুলছেন। পরবর্তীতে রেলের মতো অন্যান্য দফতরও কি এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে? এমন কথাই এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে চাকুরিপ্রার্থীদের মধ্যে।  

Powered by Froala Editor