স্কুলপড়ুয়াদের মহাকাশ-গবেষণায় প্রস্তুত করতে উদ্যোগ ভারতীয় তরুণীর

বড়ো হয়ে কী হতে চাও, এমন প্রশ্ন করলে ভারতের স্কুলপড়ুয়াদের অনেকেই উত্তর দেবে, মহাকাশে যেতে চায় তারা। এই মহাকাশের সঙ্গে ছোটোবেলার একটা অদম্য আকর্ষণ জড়িয়ে থাকে। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেইসব স্বপ্ন ছাড়তে হয় অনেককেই। এখনও এদেশে মহাকাশ গবেষণায় (Space Research) স্কুল-কলেজ স্তর থেকে পড়ুয়াদের যুক্ত করে নেওয়ার পরিকাঠামো নেই। তবে এবার সেইসমস্ত পড়ুয়াদের স্বপ্ন পূরণ করতে এগিয়ে এসেছেন লন্ডনপ্রবাসী ভারতীয় মহাকাশ গবেষক প্রিয়া প্যাটেল (Priya Patel)।

বর্তমানে লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজের পিএইচডি পড়ুয়া ২৫ বছরের প্রিয়া প্যাটেল। এর মধ্যেই নাসা এবং ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত তিনি। তবে প্রিয়ার বিশ্বাস, ভারতের পড়ুয়াদের মধ্যে মহাকাশ গবেষণার বিষয়ে যে আগ্রহ এবং প্রতিভা রয়েছে, তাকে ঠিকঠাক ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। আর তাই সেইসব পড়ুয়াদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক স্তরের গবেষণা পরিকাঠামোর যোগাযোগ ঘটাতে চান তিনি। এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে গড়ে তুলেছেন ‘সারদা ফাউন্ডেশন’ নামের একটি এনজিও। প্রিয়ার ঠাকুরমার নামে নাম এই সংস্থার। আগামী বছর থেকেই ভারতীয় পড়ুয়াদের নিয়ে নানা ছোটো ছোটো প্রকল্পের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন প্রিয়া।

গুজরাটে জন্ম প্রিয়া প্যাটেলের। গান্ধীনগরে স্কুলে পড়ার সময় থেকেই তাঁর মহাকাশ গবেষণার বিষয়ে আগ্রহ জন্মাতে শুরু করে। তখন প্রিয়ার বাবা-মা বুঝেছিলেন ভারতে থাকলে মেয়েকে উপযুক্ত সুযোগ তাঁরা দিতে পারবেন না। আর তাই ২০০৫ সালে, প্রিয়ার যখন মাত্র ৯ বছর বয়স, তখনই সপরিবারে চলে যান লন্ডনে। সেখানে ইম্পেরিয়াল কলেজ থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর ইউনিভার্সিটি কলেজ থেকে স্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেন প্রিয়া। এখন সেখানেই পিএইচডি করছেন তিনি। পাশাপাশি নাসার প্রিজারভেন্স রোভার থেকে মঙ্গলগ্রহ সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহের কাজও করেন তিনি। এছাড়া ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির ঐতিহাসিক প্রকল্প লিসার সঙ্গেও জড়িয়ে প্রিয়া। এটাই মহাকাশে প্রথম গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ অবজার্ভেটরি।

প্রিয়ার মতে, তাঁর বাবা-মার মতো হয়তো অনেকের পক্ষেই দেশ ছেড়ে চলে আসা সম্ভব নয়। তাছাড়া আর কতদিনই বা শিক্ষার উপযুক্ত পরিকাঠামো পাওয়ার জন্য পড়ুয়াদের বাইরের দেশে পাড়ি দিতে হবে? তাই ভারতেই উন্নত পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। আর সেই কাজে এগিয়ে আসতে হবে সবাইকেই। প্রিয়ার এই উদ্যোগ সেই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে প্রথম পদক্ষেপ বলেই মনে করছেন তিনি।

Powered by Froala Editor