আমেরিকার স্কুলপাঠ্যে ভারতের ‘ফরেস্ট ম্যান’, পরিবেশ বাঁচানোর স্বীকৃতি

ভারত থেকে বহুদূরে ব্রিস্টল শহর। কতদূর? সে হিসাব জানেন না ‘ফরেস্ট ম্যান’ যাদব পায়েং। তবে আমেরিকার সেই শহরে বসেই যাদবের কাহিনি পড়ছেন নার্সারি স্কুলের পড়ুয়ারা। হ্যাঁ, পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে তাঁর জীবনকেই তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্রিস্টল শহরের গ্রিন হিল স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ভারতীয়রা হয়তো সেভাবে চেনেন না আসামের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের এই মানুষটিকে। তবে ২০১৫ সালে এদেশেই তিনি পেয়েছেন পদ্মশ্রী পুরস্কার। শুধু পরিবেশের জন্য লড়াই নয়, তার জন্য একটা নতুন ভাবনার দিক খুলে দিয়েছিলেন যাদব পায়েং। আজও সেই লড়াই চলছে।

তখন ১৯৭৯ সাল। যাদবের বয়স মাত্র ১৬। গ্রামে বন্যা দেখা দিল। আর তারপরেই হঠাৎ করে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল সমস্ত সাপ। না, জলে ভেসে যায়নি তারা। বন্যার পরে আবার নতুন করে উষ্ণতা বাড়তে থাকে। আর তার ফলেই সাপগুলি মারা যেতে থাকে। তাহলে সমাধান কী? প্রশ্ন জাগল যাদবের মাথায়। উত্তর খুঁজতে খুঁজতে জানলেন বিশ্ব উষ্ণায়নের কথা। তারপর জানলেন, ক্রমশ উষ্ণতা বাড়তে থাকার কারণ জঙ্গল হারিয়ে যাওয়া। এরপর কী করতে হবে, সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছিলেন তখনই। একা হাতে এতদিন ধরে পালন করে চলেছেন ৫৫০ একরের একটা বনভূমি। কাউকে তার একটি গাছ কাটতে দেন না। একটি প্রাণীকেও আঘাত করতে দেন না। জঙ্গলের বাঘ এসে তাঁর গরু-ছাগল খেয়ে গিয়েছে। তবু তিনি দোষ দিয়েছেন মানুষের লোভকেই। মানুষ যদি পশুদের বাসস্থান কেড়ে না নিত, তাহলে তারাও তো মানুষের বাসস্থানে এসে আক্রমণ করত না।

ভারতবর্ষে তিনি সম্মান পেয়েছেন নানা সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা থেকে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। তবে ব্রিস্টল শহরের গ্রিন হিল স্কুলের শিক্ষিকা নবমী শর্মা চান, তাঁর কথা জানুক সকলে। পরিবেশ রক্ষা তো শুধু কিছু পরিকাঠামোগত বিষয় নয়, তার থেকেও অনেক বেশি মানবিক। বলছেন আরেক শিক্ষক ডন কিলিয়ানি। সারা পৃথিবীর সমস্ত শিশুদের কাছেই এই শিক্ষা পৌঁছে দেওয়ার সময় এসে গিয়েছে।

Powered by Froala Editor