বরফ নয়, আন্টার্কটিকা জুড়ে ছিল রেইন ফরেস্ট – অতীতের হদিশ দিলেন বিজ্ঞানীরা

দক্ষিণ মেরু বলতেই আমাদের মাথায় আসবে ধু ধু বরফের চাদর, তীব্র শীত, আর তুষারঝড়। সেরকমটাই দেখে এসেছি আমরা বহু বছর ধরে। হঠাৎ যদি বলা হয়, অ্যান্টার্কটিকা বা দক্ষিণ মেরুতে বৃষ্টিচ্ছায় বনাঞ্চল তৈরি হয়েছে? বা, সেখানে দেখা যাচ্ছে লম্বা লম্বা চিরহরিৎ গাছ, গুল্ম লতা? তৈরি হয়েছে আস্ত জঙ্গল? অবিশ্বাস করলে দোষ দেওয়াও যায় না। কিন্তু বিজ্ঞানীরা ঠিক এই জিনিসটাই বলছেন। তবে বর্তমান নয়, আজ থেকে আনুমানিক ৯ কোটি বছর আগে এমনই ছিল মেরু অঞ্চলের চেহারা!

আরও পড়ুন
বক্সা জঙ্গল থেকে রাউলিংয়ের উপন্যাস — বাংলার নেত্রপ্রসাদের নতুন ‘জাঙ্গল বুক’

ইংল্যান্ডের ইম্পেরিয়ল কলেজ লন্ডনের গবেষকরা সম্প্রতি এমনই কথা বললেন। ‘নেচার’ জার্নালে প্রকাশিত তাঁদের গবেষণা অনুযায়ী, ক্রিটেসিয়াস পিরিয়ডে আজকের মেরু অঞ্চলে বরফের লেশমাত্র ছিল না। তার কাছাকাছি জায়গাও আজ শীতপ্রধান। কিন্তু ৯ কোটি বছর আগে ওখানেই ছিল গাছপালা। ছিল রেইন ফরেস্ট, যা নিরক্ষীয় অঞ্চলে দেখা যায়। দক্ষিণ মেরুর মাটি বিশ্লেষণ করে এই তথ্যে এসে পৌঁছেছেন তাঁরা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সেই সময় পৃথিবীর তাপমাত্রা যথেষ্ট উষ্ণ ছিল। সেইসঙ্গে বাতাসে কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রাও অনেক বেশি ছিল।

আরও পড়ুন
৩৮৫ মিলিয়ন বছর পুরনো জঙ্গলের কঙ্কাল, হদিশ মিলল নিউইয়র্কে

গবেষণা অনুযায়ী, ওই সময় মেরু অঞ্চলের তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রিও ছাড়িয়ে যেত। এই ‘অ্যান্টার্কটিক ফরেস্ট; নিয়ে আরও গবেষণা জারি আছে। এখনও অনেক জায়গার নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। অনেক জায়গায় গবেষকদের দল পৌঁছতেও পারেননি। তবে চেষ্টা জারি আছে। একইসঙ্গে সাবধানবাণীও কি উঠে আসছে না? এখনকার পৃথিবীও ক্রমশ গরম হচ্ছে। ইতিমধ্যেই তার ভয়ানক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। পার্বত্য এলাকা-সহ অন্যান্য অঞ্চলের বরফ গলে পড়ছে। বাদ নেই মেরুও। সমস্ত বরফ গলে গেলে হয়তো আবার সেই ‘জঙ্গল’ ফিরে আসবে। কিন্তু সেসব দেখার জন্য আমরা বেঁচে থাকব তো? পরিবেশ দূষণ কমানোর উদ্যোগ সব মহল থেকেই হওয়া উচিত, এমনটা জানাতেও ভুলছেন না বিজ্ঞানীরা।