নিষিদ্ধ হচ্ছে স্ট্র, ভারতে বাজার হারানোর আশঙ্কা আন্তর্জাতিক সফট-ড্রিঙ্কস সংস্থাদের

কোল্ড কফি, মিল্ক সেক, ফ্রুট জুস কিংবা সফট-ড্রিঙ্কস— আজকের দিনে দাঁড়িয়ে যেকোনো বেভারেজেরই অন্যতম অঙ্গ হয়ে গেছে স্ট্র। কোথাও গিয়ে যেন স্ট্র-এর ব্যবহার আভিজাত্যের প্রতীকও বটে। বড়ো বড়ো রেস্তোরাঁয় সাধারণ পানীয়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যও ব্যবহৃত হয় স্ট্র। পরিবেশ বাঁচাতে এই স্ট্র-ই (Straw) এবার নিষিদ্ধ হতে চলেছে ভারতীয় মুলুক থেকে। সম্প্রতি তা নিয়েই সরব হল একাধিক আন্তর্জাতিক পানীয় প্রস্তুতকারক সংস্থারা। 

৭ এপ্রিল প্রকাশিত পরিবেশমন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ১ জুলাই থেকেই কার্যকর হবে এই নতুন নিয়ম। এই খসড়াতে একক ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক আবর্জনার তালিকাতেই রাখা হয়েছে সমস্ত ধরনের প্লাস্টিকের স্ট্রকে। উল্লেখ্য, শুধু নদী-নালার প্রবাহকে প্রভাবিত করাই নয়, স্ট্র থেকে জন্ম নেয় মাইক্রোপ্লাস্টিকও। যা ভয়াবহ প্রভাব ফেলে বাস্তুতন্ত্রে। পরিবেশের স্বাস্থ্যের কথা বিচার করেই তাই নিষিদ্ধ করা হয়েছে এই সামগ্রীকে। স্পষ্টত এমনই ইঙ্গিত দিয়েছে পরিবেশমন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তি। তবে ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্ত ঘিরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া বৈশ্বিক সফট-ড্রিঙ্কস ও গার্হস্থ্য পানীয় প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির। এমনকি ভারতের এই পদক্ষেপে এই শিল্পে কয়েক বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলেই অভিমত তাদের।

মূলত, ফ্রুট জুস, কোল্ড ড্রিঙ্কস এবং লস্যি, মিল্কসেক জাতীয় দুগ্ধজাত দ্রব্যের টেট্রাপ্যাকের সঙ্গে আবশ্যিকভাবেই সরবরাহ করা হয় প্লাস্টিকের স্ট্র। শুধুমাত্র টেট্রাপ্যাক-জাত পণ্যের বিক্রয়েই ভারতে বার্ষিক আয় হয় ৭৯০ কোটি মার্কিন ডলার। এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর— প্রতিবছর এই সময়টাতেই শীর্ষে পৌঁছায় এইধরনের পণ্যের চাহিদা। ফলে, জুলাই মাসে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ স্পষ্টতই প্রভাব ফেলবে পানীয় শিল্পে। এমনকি টেট্রাপ্যাকের চাহিদা এক ধাক্কায় তলানিতে নেমে আসতে পারে বলেও আশঙ্কিত আন্তর্জাতিক সংস্থারা। অন্যদিকে বিকল্প হিসাবে কাগজ বা অন্য পদার্থ দিয়ে নির্মিত স্ট্র বাজারে আনতে সময় লাগবে এক থেকে দেড় বছর।

বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে কোকাকোলা, পেপসি, ডাবর, পার্লে এগ্রো-সহ একাধিক সংস্থাই ভারত সরকারের দ্বারস্থ হয়েছিল টেট্রাপ্যাক-জাত পণ্যে স্ট্র-এর ছাড়পত্রের জন্য। তবে শেষ পর্যন্ত মঞ্জুর হল না সেই দাবি। চিন, অস্ট্রেলিয়া ও আরও বেশ কিছু দেশের দৃষ্টান্ত দিয়ে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়েছে, অ্যাকশন অ্যালায়েন্স ফর রিসাইক্লিং বেভারেজ কার্টনস গ্রুপ। তবে এখনও পর্যন্ত এই সম্পর্কে কোনো মন্তব্য জানায়নি ভারত সরকার… 

Powered by Froala Editor