জিআই ট্যাগ পেল কাশ্মীরের কার্পেট, ভাগ্য বদলাবে শিল্পীদের?

কাশ্মীর শুধু স্বর্গীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যই বিখ্যাত নয়। কাশ্মীরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শিল্প-সংস্কৃতির দীর্ঘ ইতিহাস। সেই কারণেই হয়তো কিছুদিন আগে সাংস্কৃতিক শহরের তকমা পেয়েছিল শ্রীনগর। এবার আরও একটি পালক জুড়ল কাশ্মীরের মুকুটে। জিআই ট্যাগ (GI Tag) পেল কাশ্মীরের বুক থেকে মুছে যেতে বসা প্রাচীন কার্পেট শিল্প (Kashmiri Carpet)। 

কাশ্মীরের শালের মতোই প্রাচীন এবং প্রসিদ্ধ সেখানকার কার্পেটও। এবং কাশ্মীরি কার্পেটের বিশেষত্ব হল, তা বোনা হয় তাঁত যন্ত্রের মাধ্যমেই। সিল্ক, মখমলের কাপড়ের ওপর। ফলে, এই কার্পেটের বোনার কাজ বেশ পরিশ্রমেরও বটে। একা হাতে একটি কার্পেট তৈরি করতে কয়েক মাসও সময় লেগে যায় শিল্পীদের। কিন্তু এই কঠোর পরিশ্রমের পরেও সেইভাবে অর্থাগম হয় না তাঁদের। বিশেষত, বৈদেশিক স্বল্পমূল্যের কার্পেটের চল বাড়ায় ভারতের বাজারে ক্রমশ চাহিদা কমেছে কাশ্মীরি কার্পেটের। বেড়েছে নকল কাশ্মীরি কার্পেটের চলও। ফলে, বাধ্য হয়েই তাই জীবিকা পরিবর্তনের পথে হেঁটেছেন অধিকাংশ শিল্পীই। 

হারিয়ে যেতে বসা এই শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতেই জিআই ট্যাগ প্রচলনের পরিকল্পনা করেছিল ভারত। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জম্মু-কাশ্মীর লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহার তত্ত্বাবধানে শুরু হয়েছিল প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার কাজ। মার্চের ১৯ তারিখে কাশ্মীরি কার্পেটের শিল্পীদের জন্য বিশেষ কিউআর কোডও প্রকাশ করে ভারত। আনুষ্ঠানিকভাবে জিআই ট্যাগ পায় কাশ্মীরি কার্পেট। এবার এই কিউআর কোড সংযোজিত এই কার্পেট পাড়ি দিল জার্মানিতে। 

ভারতে কাশ্মীরি কার্পেটের কদর কমলেও, বর্তমানে ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া মিলিয়ে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা মূল্যের কার্পেট রপ্তানি হয় ভারত থেকে। জিআই ট্যাগ প্রবর্তনের পর বৈদেশিক বাণিজ্যের পরিসর আরও বৃদ্ধি পাবে বলেই আশাবাদী শিল্পীরা। সেইসঙ্গে কিউআর কোডের মাধ্যমে পণ্যের সত্যতাও যাচাই করার সুবিধা পাবেন ক্রেতারা। বন্ধ হবে নকল কার্পেটের রমরমা। সবমিলিয়ে কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ আবার গৌরব ফেরাতে পারে হারিয়ে যেতে বসা এই শিল্পে… 

Powered by Froala Editor

Latest News See More