উল্কি আঁকা এই মমিই আটকেছে করোনার সংক্রমণ, আজব দাবি স্থানীয় প্রশাসনের

করোনা কাউকে ছাড়ছে না। বিশ্বের প্রায় সব জায়গাতেই পৌঁছে গেছে এই ভাইরাস। এমন ভয়াবহ আবহের থেকেও কিছু জায়গা নিজেদের বাঁচিয়ে রেখেছে। রাশিয়ার আলতাই এলাকাও সেরকমই একটি জায়গা। করোনার থাবা এখনও ছুটে পারেনি এই অঞ্চলকে। কেন, সেটাই অনেকের প্রশ্ন। তবে এর উত্তরও তৈরি আছে সেখানকার স্থানীয় প্রশাসনের। কোনো বিশেষ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নয়, প্রাচীন একটি মমিই তাঁদের এই আঘাত থেকে বাঁচিয়েছে! বিজ্ঞানের যুগে এমন দাবি অদ্ভুত ও যুক্তিহীন শোনালেও, ওখানকার মানুষদের কাছে এটাই বিশ্বাস।

রাশিয়ার দক্ষিণ সাইবেরিয়ার একটি অঞ্চল হল এই আলতাই। খুব বেশি হলে ২২ হাজার লোকের বসবাস এখানে। ছোট্ট সংসার বলা যায়। রাশিয়ার অনেক জায়গাতেই ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে গেছে করোনা। কিন্তু অদ্ভুতভাবে, এখানে একটা কেসও পাওয়া যায়নি। সেটা এই গোটা অঞ্চলে কম লোক থাকার জন্যও হতে পারে। অবশ্যই ভালো খবর, কিন্তু এই ভালো’র ব্যাখ্যা শুনে অনেকেই ধাঁধিয়ে যাচ্ছেন।

বারবার আলোচনায় উঠে আসছে এই মমি’র প্রসঙ্গ। কী সেই জিনিস? ১৯৯৩ সালে কয়েকজন গবেষক ও ঐতিহাসিক সাইবেরিয়া অঞ্চলের একটি প্রাচীন সমাধিক্ষেত্র থেকে একটি কফিন উদ্ধার করা হয়। আর সেই কফিনেই পাওয়া যায় একটি স্ত্রীলোকের মমি। ওই সমাধিক্ষেত্রেই এই মমির সঙ্গে পাওয়া যায় প্রচুর গয়না, ও ছয়টি ঘোড়ার অংশ। সূচনালগ্ন থেকেই রহস্যময়ী এই মমিটি। পরে ঐতিহাসিকদের গবেষণা থেকে জানা যায়, খ্রিস্টপূর্বাব্দ পঞ্চম শতকে এঁর অস্তিত্ব ছিল। সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার, গোটা মমির গায়ে উল্কি কাটা! এমন ‘ট্যাটু’ করা মমির নিদর্শন পাওয়া গেছে কিনা জানা যায় না। রাশিয়ার ইতিহাসের অন্যতম সেরা খোঁজ বলে পরে একে অভিহিত করা হয়।

এ তো গেল ইতিহাসের জিনিস। ঐতিহাসিকরাও বাহারের নাম দিলেন— আলতাই প্রিন্সেস বা প্রিন্সেস অফ ইউকক (যেহেতু ইউকক মালভূমি থেকে এই মমিটিকে উদ্ধার করা হয়)। কিন্তু এঁর আসল পরিচয় কী, সেসব কিছুই জানা যায় না। তার থেকেও বড়ো কথা, এই আলতাই প্রিন্সেসকে নিয়ে অনেক মিথ ছড়াতে থাকে। অনেকটা তুতানখামেনের মতো। এবং এই মমির শক্তি নাকি অনেক! সেই শক্তিই আলতাই অঞ্চলকে করোনার আক্রমণ থেকে রক্ষা করছে। বিজ্ঞানের দিক থেকে এমন দাবি নস্যাৎ করে দেওয়াই যায়; কিন্তু ওই যে, বিশ্বাসে মেলায় বস্তু!
সেই বিশ্বাসেই ভর করে আছে এই বাসিন্দারা।

Latest News See More