কোভিডের দ্বিতীয় তরঙ্গে মৃত্যু ৪০০-র বেশি চিকিৎসকের

করোনায় মৃত্যুমিছিলের মধ্যেই জীবন বাজি রেখে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। সারাক্ষণ একাধিক মাস্ক এবং পিপিই কিটে শরীর ঢেকে রাখা কষ্টকর। কিন্তু তার পরেও কি সংক্রমণের হাত থেকে সম্পূর্ণ রেহাই পাওয়া যায়? অন্তত দেশজুড়ে করোনায় মৃত চিকিৎসকের সংখ্যাও নেহাৎ কম নয়। সম্প্রতি ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন থেকে প্রকাশিত হল সেই পরিসংখ্যান। দেখা গিয়েছে সারা দেশে অতিমারীর দ্বিতীয় তরঙ্গে প্রাণ হারিয়েছেন ৪০০-র বেশি চিকিৎসক।

অতিমারীর প্রথম দিন থেকেই চিকিৎসকদের মৃত্যুর তালিকা প্রস্তুত করে চলেছে চিকিৎসক সংগঠন আইএমএ। এবছর দ্বিতীয় তরঙ্গের সময়েও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অবশেষে বর্তমান তরঙ্গের গ্রাফ নিম্নমুখী। নতুন সংক্রমণের চেয়ে বাড়ছে সুস্থ হয়ে ওঠার হার। ফলে শুক্রবার দ্বিতীয় তরঙ্গের সামগ্রিক পরিসংখ্যান প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিল আইএমএ। আর তাতে দেখা গিয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহে দেশজুড়ে মৃত্যু হয়েছে মোট ৪২০ জন চিকিৎসকের। এর মধ্যে যেমন রয়েছেন বেশ কিছু ডিস্পেন্সারি চিকিৎসক, তেমনই কোভিড হাসপাতালের অসংখ্য ডাক্তার। মৃত্যু হয়েছে আইএমএ-র প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডঃ কে কে আগরওয়ালের। করোনা ভাইরাসের হাত থেকে রেহাই পাননি কেউই।

পরিসংখ্যান বলছে কোভিডে সবচেয়ে বেশি চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে দিল্লি শহরে। সেখানেই সংখ্যাটা ১০০। প্রথম সারির রাজ্যের মধ্যে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ ও বিহার। এই দুই রাজ্যে মৃত চিকিৎসকের সংখ্যা যথাক্রমে ৯৬ ও ৪১। পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসক মৃত্যুর সংখ্যা ১৬। তবে আইএমএ তরফ থেকে বলা হয়েছে, প্রথম তরঙ্গের চেয়ে দ্বিতীয় তরঙ্গে সামগ্রিক মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি হলেও চিকিৎসক মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কম। গতবছরের পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছিল সারা দেশে কোভিডে মৃত্যু হয়েছিল মোট ৭৪৮ জন চিকিৎসকের। এবারে সংখ্যাটা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। কারণ পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবারে চিকিৎসকদের সুরক্ষার বিষয়ে অনেক বেশি কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়েছিল। তবুও মৃতের সংখ্যাটা নেহাৎ কম নয়। অবশ্য এসবের পরেও করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ থেকে পিছিয়ে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। চিকিৎসকরাই তো এই যুদ্ধের সবচেয়ে সামনের অংশ। শুক্রবার সে-কথাই স্পষ্ট করে দিল আইএমএ।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
ভোট নিতে গিয়ে কোভিডে মৃত ১৬২১ শিক্ষক, অভিযোগ যোগী প্রশাসনের দিকে