আপোসের চেয়ে বেকারত্ব ভালো, আন্দোলনের প্রস্তুতি ব্রিটেনের গ্যাস ইঞ্জিনিয়ারদের

অগণতান্ত্রিক কর্মব্যবস্থার সঙ্গে আপোস করে নেওয়ার চেয়ে বেকারত্বও ভালো। ব্রিটেনের কয়েকশো গ্যাস ইঞ্জিনিয়ার তাই কর্মক্ষেত্র থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। ঠিক দুই সপ্তাহ আগে ব্রিটিশ গ্যাস সংস্থা এক বিজ্ঞপ্তি মারফত তাঁদের ‘ফায়ার অ্যান্ড রিহায়ার’ প্রকল্প নিয়ে আসেন। এই প্রকল্প অনুযায়ী মোটামুটি ৭০০ জন কর্মীর সঙ্গে পুরনো চুক্তি বাতিল করে নতুন চুক্তি তৈরি করতে চায় সংস্থা। সমস্যা তৈরি হয় নতুন চুক্তিপত্র নিয়ে। সেখানে এক একজন কর্মচারীকে দৈনিক ১১ থেকে ১২ ঘণ্টা কাজ করতে হবে বলে জানানো হয়। এমনকি সপ্তাহান্তে বা বিশেষ ছুটির দিনেও অন্তত অর্ধদিবস কাজ করতে হবে বলা হয়। আর এই চুক্তিপত্রে সাক্ষরের জন্য সময় দেওয়া হয় দুই সপ্তাহ।

তবে ব্রিটিশ গ্যাসের অধিকাংশ কর্মচারীই এই অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত মেনে নেননি। গত মঙ্গলবার প্রস্তাবিত দুই সপ্তাহের সময়সীমা শেষ হয়। দেখা যায় মোট ২০০ জন কর্মচারী তাতে সাক্ষর করেছেন। বাকি ৫০০ কর্মচারী জানেন সাক্ষর না করলে তাঁদের আর কাজ থাকবে না। আর গ্যাস ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে অন্য কাজও হয়তো পাবেন না কেউ। তবু প্রতিবাদ রেখে যেতেই হবে। আর তাই তাঁরা কেউই এই চুক্তিতে সাক্ষর করেননি। তবে ব্রিটিশ গ্যাসের পক্ষ থেকেও কড়া অবস্থান নিয়েছেন আধিকারিকরা। বহু কর্মচারীর প্রতিবাদ সত্ত্বেও তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, গ্রাহকদের প্রয়োজনীয় পরিষেবা পৌঁছে দিতেই এই নতুন নিয়ম লাগু করা হচ্ছে। সংস্থার মর্যাদা রক্ষা করতে গেলে কর্মচারীদের এটুকু মেনে নিতেই হবে।

অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে ব্রিটিশ গ্যাস সংস্থায় কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এইসব আলোচনার সূত্রে উঠে আসছে সংস্থার আর্থিক পরিস্থিতির কথাও। বিগত ৫ বছর ধরে ব্যবসা ক্রমশ মন্দার দিকে এগিয়েছে। এর মধ্যে সংস্থার তিন চতুর্থাংশ গ্রাহক পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে বেশ খানিকটা আর্থিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সংস্থা। তবে এইসব কোনোকিছুই কর্মচারীদের ন্যায্য অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার যুক্তি হতে পারে না, এমনটাই মনে করছে ব্রিটেনের সম্মিলিত শ্রমিক ইউনিয়ন জিএমবি। তাঁদের মতে, ‘ফায়ার অ্যান্ড রিহায়ার’ প্রক্রিয়া বে-আইনি নয়। কিন্তু দৈনিক ৮ ঘণ্টার বেশি কোনো কর্মচারীকে কাজে বাধ্য করা যায় না। শ্রমিকদের দীর্ঘ আন্দোলনের ফলেই এই অধিকার আদায় করা হয়েছে। সামনেই আরও একটি মে দিবস আসছে। সেই লড়াইয়ের স্মৃতিতে এবং বর্তমান পরিস্থিতির সাপেক্ষে সারা ব্রিটেন ধর্মঘটের রাস্তাও বেছে নিতে পারে জিএমবি। ইতিমধ্যে ব্রিটিশ সরকারের হস্তক্ষেপও দাবি করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি কোনদিকে এগোয়, তা সময়ই বলবে।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
আমাজন-ফ্লিপকার্টে কাজ পাবেন রূপান্তরকামী ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষরাও

More From Author See More