জীবাশ্ম জ্বালানির উৎপাদন বাড়ছেই, চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট রাষ্ট্রপুঞ্জের

বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে গোটা বিশ্ব জুড়েই চর্চা চলছে গ্লোবাল ওয়ার্মিং নিয়ে। বার বার উঠে আসছে জলবায়ু পরিবর্তন, কার্বন নির্গমনের মতো কথাগুলো। পরিবেশের হাল ফেরাতে গোটা বিশ্বজুড়ে নিয়মিত আয়োজিত হচ্ছে কোনো না কোনো বৈঠক। কিন্তু বাস্তবে তার ছাপ পড়ছে কতটুকু? আদৌ কি পড়ছে? না, বরং খাতায়-কলমে পরিবেশরক্ষার ব্যাপারে অঙ্গীকার করলেও, বাস্তবে তার ১৮০ ডিগ্রি উল্টো পথে হাঁটছে জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদনকারী দেশগুলি। এবার এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল জাতিসংঘের (UN) রিপোর্টে।

বছর দুয়েক আগের কথা। ২০১৯ সালে জীবাশ্ম জ্বালানি (Fossil Fuel) এবং বিশ্ব উষ্ণায়ন সম্পর্কিত প্রথম রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল জাতিসংঘ। বৈশ্বিক উষ্ণতাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে নেওয়া হয়েছিল দশ বছরের বিশেষ পরিকল্পনা। ২০৩০ সালের মধ্যে জ্বালানি সংক্রান্ত উষ্ণতাবৃদ্ধির হারকে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস আটকে রাখাই ছিল সেই পরিকল্পনার মূল চ্যালেঞ্জ। তবে তার সিকিভাগও বাস্তবায়িত হয়নি। 

সম্প্রতি ইউএনডিপির প্রকাশিত রিপোর্ট জানাচ্ছে তেমনটাই। কয়লার উৎপাদনের হার সামান্য কমলেও, প্রাকৃতিক গ্যাস এবং তৈল উত্তোলনের মাত্রা দ্বিগুণ ছাড়িয়েছে। আর এই সমীকরণ আগামী দিনে বজায় থাকলে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের থ্রেশহোল্ড ধরে রাখা এক কথায় অসম্ভবই। এমনকি বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলির জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর জন্য বেশ কিছু উদ্যোগ নিলেও, স্থায়ী বিকল্পের ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এমনটাই অভিমত রাষ্ট্রপুঞ্জের। 

অন্যদিকে তেল, গ্যাস এবং কয়লা উত্তোলক দেশগুলির পরিকল্পনাতেও কোনোরকম বদল আসেনি। বরং, ২০৩০ সালের মধ্যে উৎপাদন বৃদ্ধির প্রকল্প নিয়েছে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলি। সেই তালিকায় আরবিয়ান দেশগুলি ছাড়াও রয়েছে রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের নাম। গবেষকদের অনুমান, আগামী দুই দশকে জীবাশ্ম জ্বালানির উৎপাদন সর্বোচ্চ মাত্রায় গিয়ে পৌঁছাবে। যা স্বাভাবিকের থেকে প্রায় ১১০ শতাংশ বেশি। তাতে কার্বন নির্গমন কমার পরিবর্তে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়বে প্রায় ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। 

আরও পড়ুন
জলবায়ু পরিবর্তনে বিচলিত তরুণ প্রজন্ম, বাড়ছে উদ্বেগ, জানাল গবেষণা

কোভিড মহামারীর সময় আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্ক এবং শক্তিধর রাষ্ট্রগুলি জীবাশ্ম জ্বালানির উৎপাদনে বিনিয়োগ কমিয়েছিল সাময়িকভাবে। তাতে বেশ কিছু ইতিবাচক দিকও চোখে পড়েছিল। কিন্তু সংক্রমণের গ্রাফ নিম্নমুখী হতেই পুনরায় বাড়ছে জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়নের প্রবণতা। সদ্য শেষ হওয়া কপ-২৬ সম্মেলনে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ ও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে উষ্ণতাবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য। এখন দেখার, আগামী দিনে সেই পরিকল্পনা আদৌ বাস্তবায়িত হয় কিনা। 

আরও পড়ুন
জলবায়ু পরিবর্তনের আভাস দিয়ে নোবেল 'ভবিষ্যৎদ্রষ্টা' বিজ্ঞানীদের

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
জলবায়ু পরিবর্তনে চেহারা পাল্টাচ্ছে পাখিদেরও!

More From Author See More