অজস্র ফ্লেমিঙ্গোর আবাসস্থল ধ্বংস করে লবণঘাঁটির প্রকল্প, সিডকোর সিদ্ধান্ত ঘিরে বিতর্ক

পরিবেশ নাকি উন্নয়ন? কোন পথে এগোবে আমাদের ভবিষ্যৎ? এই প্রশ্ন সারাক্ষণ বিচলিত করে চলেছে আমাদের। এর মধ্যেই নতুন করে বিতর্ক গড়ে উঠেছে সিটি ইণ্ডাস্ট্রিয়াল ডেভালাপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (সিডকো)-এর পরিকল্পনাকে ঘিরে। মহারাষ্ট্রের এই পরিকল্পনা সংস্থাটি সম্প্রতি জানিয়েছে নভি মুম্বাই এবং উরান অঞ্চলের জলাভূমিকে কোনোভাবেই সংরক্ষিত এলাকা বলে স্বীকৃতি দেওয়া যাবে না। তার কারণ এখানে লবণঘাঁটি গড়ে তোলা গেলে নাগরিক আয়ের একটা বড়ো উৎস খুলে যাবে।

সিডকো-র উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ইতিমধ্যে অনেকগুলি জায়গায় জলাভূমি নষ্ট করে নাগরিক প্রকল্প গড়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান এলাকাকে ঘিরে বিরোধ উঠছে সবচেয়ে বেশি। তার কারণ এটি ফ্লেমিঙ্গো পাখির আবাসস্থল। প্রতি বছর মৌসুমী কালে হাজার হাজার ফ্লেমিঙ্গো এসে ভিড় করে এখানে। এখানে জলে জন্মানো শ্যাওলা এবং জলজ উদ্ভিদের প্রভাবেই ফ্লেমিঙ্গোর শরীরে গোলাপি রং দেখা দেয়। এই এলাকা নষ্ট হয়ে গেলে বহু পরিযায়ী পাখি বিপদে পড়তে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

একদিকে যখন মুম্বাই শহরের মধ্যেই আস্ত জঙ্গলের অস্তিত্ব স্বীকার করে নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ, তখনই আবার অন্যদিকে জলাভূমির সঙ্কট ডেকে আনছে নগরায়ণ। পশ্চিমঘাট পর্বতের জঙ্গল অঞ্চলে কেটে ফেলা হচ্ছে অসংখ্য গাছ। মানুষের আগ্রাসী মানসিকতা ক্রমশ গিলে খাচ্ছে প্রকৃতিকে।

রাজ্যের ম্যানগ্রোভ উন্নয়ন পর্ষদের তরফ থেকে এর আগে বেশ কিছু জায়গার সংরক্ষণের কথা জানানো হয়েছিল। তার মধ্যেই ছিল নভি মুম্বাই অঞ্চলের এই এলাকা। কিন্তু মানুষের মুনাফাবাদী মানসিকতা সে-কথা মানতে নারাজ। অথচ এই মুনাফার আরেক নাম দেওয়া হচ্ছে উন্নয়ন। সভ্যতার অগ্রগতি কি প্রকৃতিকে ধ্বংস করেই সম্ভব? নাকি মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির সহাবস্থানও সম্ভব? বর্তমান প্রযুক্তি কিন্তু এমন অনেক রাস্তাই দেখাচ্ছে যাতে প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রেখেও উন্নয়ন সম্ভব। বেছে নিতে হবে আমাদেরই।

আরও পড়ুন
কেটে ফেলার পর মাথায় হাত; পৃথিবীর ‘প্রাচীনতম’ জীবিত গাছ ছিল ওটিই!

Powered by Froala Editor