বন্যপ্রাণীদের রাস্তা পারাপারের জন্য তৈরি হচ্ছে ওভারপাস, ভারতে প্রথম

ঘন অরণ্যের মধ্যে দিয়েই চলে গেছে দীর্ঘ সড়ক পথ কিংবা রেলওয়ে ট্র্যাক। কিন্তু জঙ্গলের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাওয়ার জন্য সেই পথকেই অতিক্রম করতে হয় বন্যপ্রাণীদের। ফলে মাঝেমাঝেই বিঘ্নিত হয় যান চলাচল। তবে তার থেকেও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বন্যপ্রাণীরাই। প্রায়শই সামনে আসে গাড়ি কিংবা রেলের ধাক্কায় বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর ঘটনা। এবার সেই সমস্যা মেটাতেই তৈরি হচ্ছে বন্যপ্রাণীদের জন্য বিশেষ ওভারপাস। 

উল্লেখ্য, ভারতে এই ধরণের উদ্যোগ এই প্রথম। নির্মায়মাণ দিল্লি-মুম্বাই গ্রিনফিল্ড এক্সপ্রেসওয়ের ওপর বানানো হচ্ছে বেশ কয়েকটি ওয়াইল্ডলাইফ প্যাসেজ। মানুষ এবং বন্যপ্রাণীদের সংঘাত যে তাতে অনেকটাই কমবে, আশা বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের। জানা গেছে নেদারল্যান্ডের ‘বন্যপ্রাণী সেতু’ বা ‘ইকোডাক্ট’-এর আদলেই তৈরি হবে এই সেতুগুলি। যা সংযুক্ত করবে রাস্তার দু’ধারের বনভূমিকে। 

দিল্লি-মুম্বাই এক্সপ্রেসওয়ের পথেই অবস্থিত রনথম্বোর বন্যপ্রাণী করিডোর এবং মুকুন্দ্রা অভয়ারণ্য। এই দুই বায়োস্ফিয়ারের বন্যপ্রাণীদের বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়ার কারণেই এই উদ্যোগ। ২.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ মোট ৫টি ওভারপাস তৈরি হচ্ছে ওই অঞ্চলে। প্রতিটি ওভারপাসের মাঝে থাকবে ৫০০ মিটারের ফাঁক। মাঝের ফাঁকা অঞ্চলগুলি এবং সেতুগুলির প্রান্তে প্রাণীদের নিরাপত্তার জন্য থাকবে দেওয়াল। এবং তা হতে চলেছে সাউন্ডপ্রুফ। পাশাপাশিই সেতুর ওপরে বনভূমির আদলেই বসানো হবে গাছ। ফলে চলাচলের জন্য ওই সেতু ব্যবহারে অস্বাভাবিকতা টের পাবে না বন্যপ্রাণীরাও। 

এই পরিকল্পনাটি ইতিমধ্যেই অনুমোদিত করেছে রাজস্থান সরকার। বন্যপ্রাণী বিভাগে পর্যালোচনার পর্যায়ে রয়েছে প্রকল্পটি। সেখানেও অনুমোদন পেলে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই শুরু হবে পরিকাঠামো গঠনের কাজ। পরিবহন ও সড়ক উন্নয়ন মন্ত্রী নীতিন গাদকারী জানিয়েছেন, ২০২২ সালে মধ্যেই শেষ হবে এক্সপ্রেস ওয়ে এই নির্মাণের কাজ। কার্যত তারপরেই ভারতে আংশিকভাবে শেষ হবে মানুষ এবং বন্যপ্রাণীদের সংঘাতের দিন...

Powered by Froala Editor