কর্মীছাঁটাই-এর পথে হাঁটছে কগনিজেন্টও? তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার পদক্ষেপে সিঁদুরে মেঘ

লকডাউন এবং করোনা— এসবের মধ্যে পড়ে গোটা বিশ্ব হিমশিম খাচ্ছে। অর্থনীতির অবস্থা শোচনীয়। ছোটো থেকে বড়ো সমস্ত জায়গায় কাজের দিক থেকে সমস্যা তৈরি হয়েছে। আর তারই মধ্যে কাঠগড়ায় উঠে এল কগনিজেন্ট। অন্যতম বিখ্যাত এই তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার বিরুদ্ধেই আঙুল তুলেছেন ভারতের কর্মীরা। অভিযোগ, এই টালমাটাল সময়ের মধ্যেই হঠাৎ করে ফোন করে চাকরি ছাড়তে বলা হচ্ছে। তাও এক-দুজন নয়, অনেকের সঙ্গেই এমনটা ঘটেছে। কলকাতা বা বাংলা নয়, গোটা ভারতেই এমনটা ঘটছে বলে জানা যাচ্ছে।

তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘটনা নতুন নয়। লকডাউন ও করোনা পরিস্থিতি তো বটেই, তার আগেও এরকম ঘটনা ঘটেছে। অর্থনীতির বেহাল দশায় সেই হার বেড়েছে। কগনিজেন্টের ক্ষেত্রে সমস্যা কোথায়? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেখানকার একজন তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী প্রহরকে জানালেন, “লকডাউন ও কোভিড পরিস্থিতিতে গোটা পৃথিবীতেই কাজের জায়গায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। কগনিজেন্টও সেই ক্ষতির সামনে পড়েছে। অনেক ক্লায়েন্টের প্রোজেক্টও চলে গেছে। সেইসঙ্গে কয়েকদিন আগেই র্যা নসমওয়্যার হানা দেয় এখানে। এরকম সাইবার হানার পরে কগনিজেন্টের বড়ো ক্ষতি হয়েছে। সেই কারণে কর্মীদের সরাসরি না বলে মানসিকভাবে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে যাতে তাঁরা নিজেরাই ইস্তফা দেন। এবং অনেকক্ষেত্রে তাঁরা সফলও হয়েছেন। এতে আইনি জটিলতাও থাকছে না। যদি কেউ ইস্তফা দিতে রাজি না হয়, তখন তাঁকে নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।”

এছাড়াও রয়েছে আরও একটি বিষয়। যারা সংস্থার কোনো প্রোজেক্টের সঙ্গে যুক্ত নন বা প্রোজেক্ট পাচ্ছেন না, তাঁদেরকে ৩৫ দিনের বেঞ্চে পাঠানো হয়। সেখানে প্রোজেক্ট খুঁজে দেওয়ার দায়িত্ব কোম্পানিরও থাকে বলে জানাচ্ছেন তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীরা। কিন্তু এখন তাঁরা সেটা করছেন না। যদি নিজে থেকেও কাজ খোঁজেন, তাহলেও সেটা করতে দেওয়া হচ্ছে না। যেন-তেন-প্রকারেণ ছাঁটাই করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন এই তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীরা। এই বিষয় কগনিজেন্ট কর্তৃপক্ষ ও এইচআর ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁরা উত্তর দেননি।

লকডাউনের এমন পরিস্থিতি, যেখানে বিশ্বজুড়ে একটা অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে; সেখানে এমন একটি ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই চিন্তা বাড়িয়েছে কর্মীদের। কাজ চলে গেলে এই বাজারে আবার কবে চাকরি আসবে, এমনই কথা বলছেন তাঁরা। এই ব্যাপারে ফোরাম ফর আইটি/আইটিইএস এমপ্লয়িজ কলকাতা চ্যাপ্টারের সাধারণ সম্পাদক কিংশুক চ্যাটার্জি প্রহরকে জানালেন, “যেটা হয়েছে বা হচ্ছে সেটা অত্যন্ত অন্যায় হচ্ছে। এখন কর্মীরা এই সিদ্ধান্তকে নাকচ করছে এবং তাঁরা লড়াইয়ের রাস্তাকেই বেছে নিয়েছে। আমরাও তাঁদের পাশে থাকব। যদি কোম্পানি এই ব্যাপারটা বন্ধ না করে তাহলে এই লড়াই আরও জোরদার করব।” সব মিলিয়ে বাংলা ও দেশের আইটি বাজারে ভালোই মেঘ জমেছে, তা বলাই যায়।

আরও পড়ুন
লকডাউন ফুরিয়ে এল, পরিযায়ী শ্রমিকরা কি আদৌ ফিরবেন কাজে?

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
স্বপ্ন ডাক্তার হওয়ার, অর্থাভাবে করোনায় মৃতদের সৎকারে ব্যস্ত উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়া