ইউরোপে বাড়ছে যৌথ পরিবার, আমাদের নাগরিক জীবন কি উল্টোমুখেই?

একটাই বাড়ি। আর তাতে ঘর ভাগাভাগি করে অনেকগুলো পরিবার। রয়েছে নিজস্ব রান্নাঘর, ডাইনিং রুম। ইংল্যান্ডে এমনই অনেক বাড়ির দেখা মেলে সহজেই। আধুনিক যুগের এই সুযোগ সুবিধাটির পোশাকি নাম ‘কো হাউজিং’। ইংল্যান্ডের বিভিন্ন জায়গায় এই ব্যবস্থাই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ক্রমশ। শুধু ইংল্যান্ডই নয়, ব্রেক্সিটের অন্তর্গত অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়ছে এই ব্যবস্থা।

আমাদের উপমহাদেশে এমন ব্যবস্থা প্রায়শই দেখা যায়। যদিও তার কোনো পোশাকি নাম নেই, কিন্তু আত্মীয়তা বা পরিচিতির সূত্রে এক বাড়িতে একাধিক পরিবারের সহাবস্থান নিতান্ত অপরিচিত নয়। হতে পারে ভাড়া বাড়িও। অবশ্য সেই পদ্ধতির কোনো পোশাকি নাম গড়ে ওঠেনি কোনোদিনই। কিন্তু পাশ্চাত্যের সমাজে, যেখানে নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি প্রাধান্য পায় বেশি, সেখানে এমন উদ্যোগের জনপ্রিয়তা বিস্ময়কর তো বটেই!

সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করেন, বাড়িতে সবার মধ্যে এক অটুট বন্ধন গড়ে ওঠে এ-ধরণের বসবাসে। একাকী বসবাস করা সচরাচর মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। বিপদে আপদে পাশে থাকেন প্রতিবেশীরাই। তাই তাঁদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার আগ্রহ দেখাচ্ছেন অনেকেই। আলাদা বাড়ি করে, জনমানসের থেকে একরকম বিচ্ছিন্ন হতে ভালোবাসেন না অনেকেই। তাই গুরুত্ব বেড়েছে কো-হাউজিংগুলির।

হারিয়ে যাচ্ছে একান্নবর্তী পরিবারের চিন্তাভাবনা। এখনকার বাচ্চারা বড় হচ্ছে তিন বা পাঁচ জনের পরিবারে। এ-দেশও তার ব্যতিক্রম নয়। এখানেই উঠে আসে ভিন্ন এক প্রশ্নও। পশ্চিমের অনুকরণে বর্তমান নাগরিক সমাজেও পারিবারিক বিচ্ছিন্নতা বাড়ছে ক্রমশই। যৌথ পরিবার অনেকক্ষেত্রেই এখন একটি মিথ। সেখানে, ইংল্যান্ডের মতো দেশ সহাবস্থানের দিকেই যদি নজর ফেরায় আবার, ভারতেও কি ফিরে আসবে তা? ভবিষ্যতের কাছে প্রশ্ন রইল।