দেশের বেকারত্বের হার ১৪.৭ শতাংশ, এক বছরে সর্বাধিক – জানাচ্ছে সিএমআইই

অতিমারীর শুরুর দিন থেকেই মুখ থুবড়ে পড়েছে দেশের অর্থনীতি। সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বেকারত্ব। তবে আজ এতদিন পর পরিস্থিতি খানিকটা নিয়ন্ত্রণে আসবে, এমনটাই আশা করেছিলেন মানুষ। বাস্তব ছবি যদিও সম্পূর্ণ অন্য কথা বলছে। সম্প্রতি সেন্টার ফর মনিটারিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি কর্তৃক প্রকাশিত একটি রিপোর্টে দেখা যায়, বর্তমানে সারা দেশে বেকারত্বের হার ১৪.৭ শতাংশ। ২০২০ সালের জুন মাস থেকে এখনও পর্যন্ত এটাই সবচেয়ে বেশি। আর নতুন করে এই বেকারত্ব বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেখা দিয়েছে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তাও।

সিএমআইই কর্তৃক প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ১৬ মে পূর্ববর্তী সপ্তাহে শহরাঞ্চলে বেকারত্বের হার ছিল ১৪.৭ শতাংশ। গত সপ্তাহে যা দাঁড়াউ ১৭.৪ শতাংশে। তবে গ্রামীণ বেকারত্বের হার ১৪.৩ শতাংশ থেকে কমে ১৩.৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সব মিলিয়ে অবশ্য পরিসংখ্যানটা ১৪.৫ শতাংশ থেকে ১৪.৭ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে। আর এপ্রিলের শুরু থেকেই বেকারত্বের গ্রাফ উর্ধ্বমুখী বলে জানিয়েছে সিএমআইই।

সিএমআইই-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিকাশ ব্যাস জানিয়েছেন, গতবছরের লকডাউনের শুরুতে এক ধাক্কায় বেকারত্বের সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল। এবার সেই পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, সেদিকে নজর রাখতেই কেন্দ্রীয় লকডাউন করা হয়নি। কিন্তু তার পরেও এই ফলাফল নিঃসন্দেহে চিন্তার বিষয়। অসংগঠিত ক্ষেত্রের পাশাপাশি সংগঠিত ক্ষেত্রেও বহু কর্মী ছাঁটাই হয়েছেন। এপ্রিল মাস থেকেই শহরাঞ্চলে প্রতি সপ্তাহে কর্মী ছাঁটাইয়ের হার ৮ শতাংশের উপরে পৌঁছে গিয়েছে। অবিলম্বে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি মুখ থুবরে পড়বে বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

২০২০ সালের এপ্রিল মাস থেকে যে বেকারত্বের মিছিল শুরু হয়েছিল, নানা উদ্যোগের ভিতর দিয়ে জুন মাস নাগাদ তা অনেকটা থিতু হয়। এর পর বেকারত্বের হার কখনই ৭-৮ শতাংশের বেশি ওঠেনি। তবে এপ্রিল মাসের শুরু থেকে গ্রাফটা হঠাৎ বাড়তে থাকে। আর এখন তা ১৪ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে। এর পিছনে অনেকে লকডাউনকে দায়ী করলেও তা মানতে রাজি নন বিকাশ ব্যাস। বরং তাঁর মতে, এবারে ছোটো ছোটো অঞ্চল চিহ্নিত করে স্বল্প সময়ের জন্য লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। আসলে কর্মসংস্কৃতিতেই কোনো এক বিশেষ ধরণের পরিবর্তন হতে চলেছে বলে মনে করছেন তিনি। সেই পরিবর্তনকে চিহ্নিত করে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, এপ্রিলের শুরু মহাত্মা গান্ধী নরেগা প্রকল্পের ভিতর দিয়ে গ্রামীণ কর্মসংস্থান বাড়িয়ে তোলার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, তাও সামগ্রিকভাবে সফল নয়। অতএব বদলে যাওয়া পরিবেশের সঙ্গে বদলে যাওয়া অর্থনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নতুন কর্মসংস্থান প্রকল্প তৈরি করতে হবে।

আরও পড়ুন
ভয়ঙ্কর বেকারত্বের শিকার মেক্সিকো, হাহাকার সামাজিক মাধ্যমে

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
আপোসের চেয়ে বেকারত্ব ভালো, আন্দোলনের প্রস্তুতি ব্রিটেনের গ্যাস ইঞ্জিনিয়ারদের

Latest News See More