প্রথম মহিলা হিসেবে টেস্টে ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ক্লেয়ার, ইতিহাসের সাক্ষী ভারত-অস্ট্রেলিয়া

আজ থেকে সিডনি স্টেডিয়ামে শুরু হল ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজের তৃতীয় টেস্ট। দীর্ঘ করোনা বিরতির পর এই আন্তর্জাতিক টেস্ট সিরিজ নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমী মানুষের মধ্যে উৎসাহের শেষ নেই। আর এর মধ্যেই সিডনি স্টেডিয়াম সাক্ষী থাকল এক ইতিহাসের। প্রতিটা বল, বেল এমনকি পিচের দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন ক্লেয়ার পোলোসাক। তিনি পুরুষ নন, নারী। অথচ পুরুষদের টেস্ট ক্রিকেটের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব তাঁরই উপর। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে কোনোদিন ঘটেনি।

শুধুই পুরুষদের ক্রিকেট নয়, মহিলা ক্রিকেটেও দীর্ঘ সময় আম্পায়ারিং-এর দায়িত্বে দেখা গিয়েছে পুরুষদেরই। সেই বৈষম্যও প্রথম ভেঙে দিয়েছিলেন ক্লেয়ার পোলোসাক। সেটা ২০১৬ সাল। মহিলা ক্রিকেটের টি-২০ বিশ্বকাপে প্রথম ফিল্ড আম্পায়ার হিসাবে দেখা গেল ক্লেয়ার এবং তাঁর নিউজিল্যান্ডের সহকর্মী কেথি ক্রসকে। এরপর ২০১৯ সালে নামিবিয়া এবং ওমানের মধ্যে অনুষ্ঠিত একদিনের ম্যাচেও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন তিনি। সেই ম্যাচ ছিল দুই দেশের পুরুষ দলের মধ্যে। ক্রিকেটের ইতিহাসে সেই প্রথম দুই পুরুষ দলের ম্যাচের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিলেন কোনো মহিলা। আর এবার পুরুষদের টেস্ট ক্রিকেটেও ফোর্থ আম্পায়ারের ভূমিকায় দেখা গেল তাঁকে।

নিউ সাউথ ওয়েলসের ক্লেয়ার ছোটো থেকেই ক্রিকেটের অনুরাগী। অবশ্য মাঠে নেমে খেলায় অংশগ্রহণ করেননি কোনোদিন। তবে ক্রিকেটের ইতিহাস থেকে যাবতীয় নিয়মকানুন সম্পর্কে খোঁজ রাখেন ছোটো থেকেই। ঠিক এই সময় বাবার পরামর্শে ঠিক করলেন, মাঠে খেলার জন্য না হোক, আম্পায়ারিং-এর জন্য নামবেন তিনি। যেমন ভাবনা তেমনই কাজ। মাত্র ১৫ বছর বয়সে স্থানীয় ক্রিকেট ক্লাবের প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে শুরু পথচলা। তারপর একে একে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের খেলায় আত্মপ্রকাশ। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট বোর্ডের তরফ থেকেও বরাবর সহযোগিতা পেয়ে এসেছেন তিনি। আর আইসিসি-র নিয়ম অনুযায়ী যেখানে ফোর্থ আম্পায়ারের নাম বেছে নেন আয়োজক দেশের বোর্ড, সেখানেও ক্লেয়ারের নামই বেছে নেওয়া হল। এই ইতিহাস শুধু ক্রিকেটের ইতিহাস নয়। এটা লিঙ্গসাম্যের ইতিহাস। আর সেই যাত্রায় আগামী দিনেও ক্লেয়ার পোলোসাকের মতো অন্যান্য সাহসিনীরা এগিয়ে আসবেন, এমনটা আশা করাই যায়।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
মহিলাদের রাগবি খেলায় উৎসাহ দিতে প্রচারের মুখ উত্তরবঙ্গের সন্ধ্যা